শিরোনাম
রাজধানীর কলাবাগানের হাতিরপুলে এক শিশু গৃহকর্মীর ওপর বর্বর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফারজানা আক্তার নামের ওই গৃহকর্মীর বয়স মাত্র ১৫ বছর। কলাবাগানের ওই বাসায় দীর্ঘ ৭ বছর ধরে কাজ করে আসছিল ফারজানা। প্রথম দিকে ভালোভাবে কাজ করলেও গত ১ বছর ধরে নির্যাতন শুরু হয় তার ওপর। ক্রমেই বাড়তে থাকে অমানবিক এই নির্যাতনের মাত্রা। তাকে বিবস্ত্র করে হারপিক খাইয়ে নির্যাতনেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
২০২১ করোনায় মারা যান গৃহকর্তী লাবলী ইউসুফ। এরপর ফারজানা কাজ করতেন লাবলীর মেয়ে সুমির বাসায়। আর সেখানেই ফারজানার ওপর চলতো এই নির্যাতন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফারজানা মুমূর্ষু অবস্থায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ফারজানার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে মেয়ের জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ দেখে দিশেহারা বাবা মো. বেলাল।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার মেয়ে ৭ বছর ধরে লাবলী ম্যাডামের বাসায় কাজ করে আসছিল। করোনায় ম্যাডামের মৃত্যুর পর তার মেয়ে সুমির কাছে থাকতো। গত ১ বছর ধরে সুমি আমার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছে।
কীভাবে নির্যাতন করা হতো, এমন প্রশ্নে ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা বলেন, কোনো ভুল হলেই মারধর করতো। কয়েকদিন আগে আমার মেয়েকে টয়লেটে আটকে রেখে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে। তারপর হারপিক খাইয়ে দিয়েছিল। কিছু হলেই সুমি ও তার ভাই হিরণ নির্যাতন চালাতো।
দেখা করতে দিতো কি না জানতে চাইলে ফারজানার বাবা বলেন, দেখা করতে দিতো না। আমরা দেখা করতে গেলে ভেতরে ঢুকতেই দিতো না। শুধু মোবাইল ফোনে কথা বলতে দিতো। আর মোবাইলে নির্যাতনের কথা না বলার জন্য ভয় দেখানো হতো। কিন্তু ম্যাডাম যখন জীবিত ছিলেন, তখন আমার মেয়েটাকে অনেক আদর করতেন।
তিনি আরও বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি ফারজানাকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এর ফলে মেয়েটি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি করা হয়।
দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা বেলাল জানান, রাজমিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতেন তিনি। একটি দুর্ঘটনায় তার পা ভেঙে যাওয়ায় তিনি মেয়েকে কাজে দিতে বাধ্য হয়েছেন। বরিশালের বাকেরগঞ্জে তাদের গ্রামের বাড়ি।
সূত্র: আরটিভি