শিরোনাম
জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশন বসছে রোববার (১৬ জানুয়ারি)। বছরের প্রথম এই অধিবেশনে সংবিধানের বিধান মেনে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। মহামারিকালের অন্য অধিবেশনগুলোর মতো এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় সংসদের বৈঠক চলবে। তবে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারের জন্য বাড়তি কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। সূত্র: আরটিভি
জানা গেছে, আগামীকাল রোববার বিকেল ৪টায় সংসদের বৈঠক শুরু হবে। গত ১ জানুয়ারি সংসদ অধিবেশন আহ্বান করেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দিন সংসদের বৈঠকের শুরুতে শোক প্রস্তাব ও সভাপতিমণ্ডলীর মনোনয়নের পর স্পিকার রাষ্ট্রপতিকে ভাষণ দেওয়ার আহ্বান জানাবেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর অধিবেশন মুলতুবি করার রেওয়াজ আছে।
এরপর যখন বৈঠক আবার বসবে তখন রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব আনা হবে। পুরো অধিবেশনজুড়ে সেই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করবেন সংসদ সদস্যরা।
অধিবেশনের শুরুর দিন কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ সনদ পাওয়া সব সংসদ সদস্য অংশ নেবেন। এরপর থেকে তাদের তালিকা অনুযায়ী ঢোকানো হবে। সংসদের হুইপরা এ নিয়ে তালিকা তৈরিও করে ফেলেছন।
সরকারি দলের হুইপ ইকবালুর রহিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এবার অধিবেশনে সংসদ কক্ষে বাড়তি কর্মচারীও রাখা হবে না। ঠিক যে কয়জন দরকার সেই অনুযায়ী রাখা হবে। সংসদ সদস্যরা যারাই বৈঠকে যোগ দেবেন তাদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করাতে হবে।’
তিনি জানান, শুরু হতে যাওয়া এই অধিবেশন ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে পারে।
মহামারিকালে এই অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হলেও বছরের শুরুর অধিবেশন ৩০ কার্যদিবস চলারও রেকর্ড আছে।
এদিকে সংসদ সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তবে অধিবেশন চলাকালে বিভিন্ন শাখার কর্মচারীর সংখ্যা কমানো হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের শুধু প্রথম দিন সংসদ অধিবেশনের খবর সংগ্রহের জন্য সংসদ ভবনে ঢুকতে দেওয়া হবে। সেজন্য গত শুক্রবার তাদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে সংসদ সচিবালয়। সংসদের রাষ্ট্রপতির চেম্বার, গ্যালারি, প্রবেশের পথসহ বিভিন্ন জায়গায় চলাচল সীমিত করা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর বাদকদের নিয়ে চলছে রিহার্সেল।
রেওয়াজ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সংসদের উত্তর প্লাজা দিয়ে আইনসভা ভবনে প্রবেশ করবেন, যা ‘প্রেসিডেন্ট প্লাজা’ নামেও পরিচিত।
৬৫ হাজার বর্গফুটের এই জায়গা মূলত রাষ্ট্রপতির প্রবেশের জন্য তৈরি করা। ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি এখান দিয়ে সংসদে ঢোকেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
এর আগে প্রায় ৫ বছর পর এই প্লাজা দিয়ে কোনো রাষ্ট্রপ্রধান ঢোকেননি। আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকে বছরের প্রথম অধিবেশনে এই প্লাজা দিয়েই সংসদে ঢুকেছেন।
সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিবছর ফুল দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। তবে এবার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার জন্য তা করা হবে না।
সংসদ ভবনে প্রবেশ করে রাষ্ট্রপতি সংসদের বিশেষ লিফটে চড়ে সাত তলায় রাষ্ট্রপতির চেম্বারে যাবেন। সেখান থেকে অধিবেশন কক্ষে যাবেন আবদুল হামিদ। স্পিকার তাকে আমন্ত্রণ জানালে বিউগলে ফ্যানফেয়ার বাজবে। রাষ্ট্রপতি সংসদে ঢুকলে নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় সংগীত বাজানো হবে।
স্পিকারের পাশে চেয়ারে বসবেন রাষ্ট্রপতি। তাকে ভাষণ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানোর পর ডায়াসে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেবেন রাষ্ট্রপ্রধান। মন্ত্রিপরিষদ থেকে ঠিক করে দেওয়া ভাষণের সংক্ষিপ্তসার সংসদে পাঠ করবেন রাষ্ট্রপতি।
সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে জানা গেছে, এবার কয়েকটি আইন প্রণয়নের কাজ রয়েছে। নতুন চারটি খসড়া আইন সংসদে তোলার জন্য জমা পড়েছে। সেগুলো হলো- বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ বিল, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, বাণিজ্য সংগঠন বিল এবং পেমেন্টস অ্যান্ড সেটেলমেন্টস বিল। এ ছাড়া আগের সাতটি বিল সংসদীয় কমিটিতে পরীক্ষাধীন রয়েছে।