শিরোনাম
বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে দেশে ১৯৯১ সালে একটি আইন করা হলেও বাস্তবে নেই তার প্রয়োগ। ফলে বিভিন্ন সময় বাড়িওয়ালাদের সঙ্গে ভাড়াটিয়াদের ভাড়া বা বাসা ছাড়া নিয়ে বিরোধ লেগেই থাকে। অবিবাহিতদের ভাড়া না দেওয়া নিয়ে আছে বিস্তর অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরশেদ মনে করেন, কমিশন গঠন করে ওয়ার্ডভিত্তিক ভাড়া নির্ধারণ করলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। সূত্র: আরটিভি
বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনে বলা আছে, ভাড়া দেওয়ার আগে মালিক ও ভাড়াটিয়াকে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে। বাড়ি ভাড়া বাজার মূল্যের ১৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো যাবে না।
তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয় মৌখিক চুক্তিতে। চুক্তিপত্র না থাকায় হুট করে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ আর ইচ্ছেমতো ভাড়া বাড়ানোর অভিযোগ লেগেই থাকে। আর অবিবাহিতদের বাড়ি ভাড়া না পাওয়ার আক্ষেপ তো বহু পুরনো।
বাড়িওয়ালাদের সংগঠন বাংলাদেশ হাউজ অ্যান্ড ফ্ল্যাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মতে, অবিবাহিতদের যেকোনো অপকর্মের দায় বাড়ির মালিকের ওপর চাপানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন আচরণের কারণে অবিবাহিতদের বাড়ি ভাড়া দিতে চান না বেশির ভাগ মালিক।
বাংলাদেশ হাউজ অ্যান্ড ফ্ল্যাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দীন বলেন, অবিবাহিতদের বাড়ি ভাড়া দিতে না চাওয়ার কারণ হলো কোনো সমস্যা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রথম এসে ধরে বাড়ির মালিককে।
পুলিশ বলছে, একজন বাড়িওয়ালা কাকে ভাড়া দেবেন, এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের নিয়ম করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, আমারা দেখি কে অপরাধ করল? ব্যচেলর যদি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে বা জঙ্গিবাদে জড়িত থাকে, তাহলে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করব। এ ক্ষেত্রে সে কোন বাড়িতে অবস্থান করতেছে, সেই বাড়ির মালিক ওই ব্যাচেলরের ঠিকানা রেখেছে কি না, তার পরিচয় জানে কি না, সে ঢাকা মহানগর পুলিশের দেওয়া ভাড়াটিয়া ফর্ম ফিলাপ করে ভাড়া দিছে কি না, এখানে যদি আমরা দেখি সে নির্দেশনা মানেনি। একজন জঙ্গিকে ভাড়া দিয়েছে, সে যে একজন অপরাধীকে ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হলো না, তার দায়িত্ব অবহেলার জন্য আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নিয়ে আসব।
সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিশন গঠন করে ওয়ার্ডভিত্তিক বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করা উচিত।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলেন, বাড়া নির্ধারণ সরকারের পক্ষ থেকে করা হোক। সরকার একটি কমিশন গঠন করে ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে। কমিশন না করে সরকার একটা কমিটি করে দিলেও সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
১৯৯১ সালের আইনটি যুগোপযোগী করতে না পারলে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব না বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।