শিরোনাম
চট্টগ্রাম মহানগরীতে গণপরিবহণ সংকট দীর্ঘদিনের। অফিসে আসা-যাওয়ার সময় এ সংকট যেন আরও বেশি বেড়ে যায়। তার ওপর করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কাল থেকে কার্যকর হচ্ছে গণপরিবহণে অর্ধেক আসনে যাত্রী পরিবহণের সিদ্ধান্ত। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে নগরীতে যানবাহন সংকট আরও প্রকট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে করোনার মধ্যে স্কুল-কলেজ, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত খোলা রেখে শুধু গণপরিবহণে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলের সিদ্ধান্ত সঠিক হবে না বলে মনে করছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
নগর ট্রাফিক পুলিশ সূত্র জানায়, মহানগরীর ১৭ রুটে দেড় হাজার বাস-মিনিবাস চলাচলের কথা থাকলেও আছে মাত্র সাড়ে ৪শ গাড়ি। অনেক গণপরিবহণ যাত্রী পরিবহণ না করে পোশাক কারখানায় শ্রমিক টানছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহণ মালিক গ্রুপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীতে আগে থেকেই যানবাহন সংকট রয়েছে। তার ওপর অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহণ চলাচলের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে এ সংকট আরও তীব্র হবে। তবে এ বিষয়ে আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। ভাড়া বাড়ানো হলে তখন আমরা ভেবে দেখব। যদি ভাড়া বৃদ্ধি না করে সরকার আমাদের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহণ চলাচলের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, করোনায় গাড়ি বন্ধ থাকায় অনেক গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। সেগুলো মেরামতের সামর্থ্য অনেক মালিকের নেই। এ কারণে এসব গাড়ি স্ক্র্যাপ হিসাবে বিক্রি করতে হচ্ছে। সড়কে যে পরিমাণ গাড়ি ছিল বর্তমানে তার ৩০ শতাংশ গাড়িই নেই।
নগর ট্রাফিক পুলিশ সূত্র জানায়, নগরীর ১৭টি গণপরিবহণের (বাস-মিনিবাস) রুটে ১ হাজার ৫৪৫টি গাড়ি চলাচলের সিলিং রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১৭৫টি গাড়ির রুট পারমিট দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে ৪৫০-৪৭০টির বেশি গাড়ি এসব রুটে চলছে না। তবে অনুমোদন নেওয়ার পরও কয়েকটি রুটে গণপরিবহণ চলাচল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপের যুগ্ম-সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, চট্টগ্রামে যাত্রী তুলনায় যে পরিমাণ গণপরিবহণ থাকার কথা তা নেই। বরং করোনায় ২ বছরে সড়কে গণপরিবহণ আরও কমেছে। গণপরিবহণ কমে যাওয়ায় রুট পারমিটবিহীন ও অনুমোদনহীন যানবাহনের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। গণপরিবহণ কমে যাওয়ার কারণ হিসাবে তিনি জানান, পরিবহণ ব্যবসা এখন লোকসানি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এ কারণে নতুন যানবাহন এ সংগঠনে যুক্ত হচ্ছে না। বিপরীতে গণপরিবহণ কমছেই।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যেও জীবন-জীবিকা সচল রাখার স্বার্থে স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবকিছু খোলা রেখে শুধু গণপরিবহণে অর্ধেক যাত্রী পরিবহণের সিদ্ধান্ত কাগুজে সিদ্ধান্তে পরিণত হবে। এ অজুহাতে আবারও ভাড়া বাড়ানো হলে তা সাধারণ মানুষের জীবন বিষিয়ে উঠবে। এ সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসার অনুরোধ জানান তিনি।
সূত্র: যুগান্তর