ঢাকাবাসীকে পানির শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারবো: ওয়াসা এমডি

ফানাম নিউজ
  ১১ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:২০

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেছেন, আমরা ঢাকা শহরের মানুষের জন্য পানি ব্যবস্থার শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারবো এবং সে অবস্থায় পৌঁছে গেছি। এখন মেজর কোনো সমস্যা নেই। কিছু মাইনর সমস্যা রয়েছে, সেগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি গণমুখী, পরিবেশবান্ধব ও টেকশই পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে। আমাদের দক্ষতা, সক্ষমতা এবং একাগ্রতায় এ তিনটি জিনিস থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রীও চান চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট। আমরা পরিবর্তন করতে কাজ করছি।

সোমবার (১০ জানুয়ারি) ওয়াসা ভবনে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডুরা) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ওয়াসা এমডি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে- গতানুগতিক কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে একটি পরিবর্তন আনা। আমরা একে ডিজিটাল করতে চাই এবং করতে পেরেছি। আমাদের প্রায় সব কাজ এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে হচ্ছে। আমরা যা করতে পেরেছি, তা অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো করতে পারেনি।

তাকসিম এ খান আরও বলেন, আমাদের কোনো কিছুই গোপনীয় নেই। ঢাকা ওয়াসার কেউ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে ভুল হতেই পারে। ভুলের মাধ্যমে লসও হতে পারে। কিন্তু সামান্য দুর্নীতি হলে তা সহ্য করা হয় না। এটা বলতে পারি- আমাদের যে সিস্টেম রয়েছে তাতে দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। আমাদের অ্যান্ট্রি করাপশন ইউনিট রয়েছে। তারা ক্যাম্পিংও করছে। অনেকে শাস্তিও পেয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা রিসার্স এবং উন্নয়নে অনেক টাকা ব্যয় করি এবং করছি। এতে অনেক সফলও হয়েছি। যে কারণে ঢাকা ওয়াসা এখন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে রোল মডেল। নেপাল তাদের পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে আমাদের ওয়াসা থেকে টিম নিয়েছে।

তাকসিম এ খান বলেন, একসময় পানির জন্য কলসি মিছিল হতো। সেনাবাহিনী দিয়ে পাম্প পাহারা দেওয়া লাগতো। এখন এসব নেই। সবার ঘরে ঘরে পানি পৌঁছে যাচ্ছে। আমরা সব সিস্টেম ডিজিটাল করেছি। কোনো ঠিকাদার বিলের জন্য আসতে হয় না। পেনশনের জন্যও কাউকে আর দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ওয়াসা ভবনে আসা লাগে না। সব বিল ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। আমাদের ওয়াসার কোনো কাজে চেকের ব্যবহার নেই।

‘আমাদের সফলতা দেখে এখন বড় বড় প্রতিষ্ঠান ঋণ দেওয়ার জন্য এসে বসে থাকে। কারণ, আমরা সক্ষমতা অর্জন করতে পেরেছি’-যোগ করেন তিনি।

সভায় ঢাকা ওয়াসার পরিচালক (কারিগরি) একেএম সহিদ উদ্দিন বলেন, আমাদের অনেক কিছুর প্রচার নেই। অনেক ভালো কাজ রয়েছে। সেবা সহজীকরণ করতে আমরা নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু করেছি। সেখানে যে কোনো অভিযোগ করা যাচ্ছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেই।

ঢাকার দুর্গন্ধযুক্ত পানির বিষয়ে তিনি বলেন, শীতকালে শীতলক্ষ্যার পানি একেবারেই আলকাতরার মতো কালো হয়ে যায়। সেই পানিকে শোধন করে আমরা বিশুদ্ধ করে সরবরাহ করে থাকি। সেই দূষণের দায়-দায়িত্ব তো আমাদের না। তারপরও আমরা একে ট্রিটমেন্ট দিয়ে বিশুদ্ধ করি। আগে পানিতে এমোনিয়া বেশি আসতো। এখন আমরা কিছু গাছ লাগিয়ে প্রাকৃতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি।

পানি ফুটিয়ে খাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের লাইনে বিশুদ্ধ পানি থাকে। কিন্তু সেই পানি বাসার ট্যাঙ্কি বা রিজার্ভারে গিয়ে নষ্ট হয়। অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে পানির ট্যাঙ্কি পরিষ্কার করে না। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে পাইপ লিকেজ হয়। তবে এখন আর পাইপ লিকেজ হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ, আমরা অনেক উন্নতমানের পাইপ বসিয়েছি। লাইনের পানি টেস্ট করে দেখাতে পারবো আমাদের পানি বিশুদ্ধ। কিন্তু এটার গ্যারান্টি দেওয়া যাবে না, কারণ যে কোনো মুহূর্তে লাইনে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ডুরা সভাপতি রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম শামীম, হাসিব মাহমুদ শাহ, সাধারণ সম্পাদক শাহেদ শফিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়শ্রী ভাদুড়ী, অর্থ সম্পাদক শাহজাহান মোল্লা সাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক নিলয় মামুন, প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক জহিরুল ইসলাম; প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক বারেক কায়সার; কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, রফিকুল ইসলাম রনি, সদস্য সাদ্দাম হোসাইন ও আবির হাকিম।

সূত্র: জাগো নিউজ