শিরোনাম
৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯২টি ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল ও অসহায় পরিবার ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের পাকা ঘর পাবে। যার মূল্য আগে নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ লাখ টাকা। এজন্য সরকার আরও ৬ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা ব্যয় করবে। ফলে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পটির চতুর্থ সংশোধন করা হবে। বাংলাদেশে ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল ও অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে উপকারভোগীদের দারিদ্র্য বিমোচন এবং ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা হবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে।
প্রকল্পসূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। আগামী মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি সংশোধনের জন্য উপস্থাপন করবে পরিকল্পনা কমিশন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী মানবিক। ওনার একটাই ভিশন, কেউ ঘরহারা থাকবে না, কেউ না খেয়ে থাকবে না। সবাই যাতে মোটা ভাত, মোটা কাপড় পরে মানবিক জীবনযাপন করতে পারে, সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। পর্যায়ক্রমে সব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের আবাসন ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রকল্পের সময় বাড়িয়ে আরও বেশি মানুষকে এ প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে।
জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। মূল অনুমোদিত প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১ হাজার ১৬৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এরপর প্রথম সংশোধিত ব্যয় ২ হাজার ২০৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সংশোধিত ব্যয় ছিল ৪ হাজার ৮৪০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। তৃতীয় সংশোধিত ব্যয় ছিল ৪ হাজার ৮২৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
কাজের পরিধি বাড়ার ফলে চতুর্থ সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১১ হাজার ১৪২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। ফলে পাঁচ লাখ মানুষকে পাকা বাড়িতে দিতে সরকার আরও ৬ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা ব্যয় করবে। প্রকল্পটি অনুমোদনের পর জুন ২০২৩ মেয়াদে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
নানা কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে। মুজিববর্ষে দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ‘গৃহ প্রদান নীতিমালা-২০২০’ বাস্তবায়ন এবং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রকল্পের কাজ ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন করার সানুগ্রহ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আংশিক সংশোধিত ডিজাইন মোতাবেক একক গৃহের নির্মাণ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
প্রকল্পের আওতায় ৫ হাজার ১৪৯টি পাকা ব্যারাক, চরাঞ্চলে ৫ হাজার ৭৮টি সিআইসিট ব্যারাক, ৪ হাজার ৩৯৩টি সেমিপাকা ব্যারাক নির্মাণ ও ৬০টি বহুতল ভবন নির্মাণ হবে। ১ হাজার ১২০টি কমিউনিটি সেন্টার, ৫৮০টি বিশেষ ডিজাইনের ঘর, ৫৬৫টি ঘাটলা, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, বক্স কালভার্ট, পাকা ড্রেন ও স্লপ প্রোটেকশন নির্মাণ করা হবে। সব প্রকল্প গ্রামে অগভীর-গভীর নলকূপ ও অভ্যন্তরীণ রাস্তাও থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আবাসন সুবিধা নিশ্চিতকরণ এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে পিছিয়েপড়া গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবে বিবেচনায় এটি ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
সূত্র: জাগো নিউজ