শিরোনাম
ঢাকার ধানমন্ডিতে সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও বাদ্যযন্ত্রী রাহুল আনন্দের বাসায় সময় কাটিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১২টার দিকে রাহুল আনন্দের বাসায় হাজির হন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
তিনি ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট বাংলার লোক-ঐতিহ্যের আবহে ডুবেছিলেন। রাহুলের স্টুডিওতে বসে তিনি গান শুনেছেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রসঙ্গে জেনেছেন। সেই সঙ্গে উপহার দিয়েছেন ও পেয়েছেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের জন্য বাসার ফটকের সামনের অংশ ফুল দিয়ে সাজান রাহুল আনন্দ ও তার স্ত্রী শর্মিলা শুক্লা। এতে ছিল গোলাপ ও গাদা।
ফুলের সাজসজ্জা দেখে বিমোহিত হয়েছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ছবি তোলার সময় বেশ কয়েকবার সেদিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেছে তাকে। ফরাসি প্রেসিডেন্টকে প্রথমে ফকির লালন সাঁইয়ের ‘আর কি বসবো এমন সাধুর সাধবাজারে/না জানি কোন সময় কোন দশা ঘটে আমারে’ গেয়ে শোনান রাহুল আনন্দ। এরপর তিনি পরিবেশন করেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ‘আমি বাংলায় গান গাই’।
গান পরিবেশন শেষে রাহুল আনন্দ বলেন, ‘মহামান্য প্রেসিডেন্ট, আপনার এই আগমন আমাদের দেশের জন্য, আমার পরিবার ও বন্ধুদের জন্য বিরাট আনন্দের।’
রাহুল আনন্দ যে একতারা বাজিয়ে গান গেয়েছেন সেটি উপহার দেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে। তিনি সেটি হাতে পেয়ে বাজানোর চেষ্টা করেন। মরমী শিল্পী আব্দুল আলীমের ‘নাইয়ারে নায়ের বাদাম তুইলা’ গানটি গাইতে গাইতে রাহুল তাকে দেখিয়ে দেন কীভাবে বাজাতে হবে। তারপর দুই জন একসঙ্গে একতারা বাজাতে থাকেন।
রাহুল বলেন, ‘এই পরিবেশনাকে বলতে পারেন বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের দুই সংগীতশিল্পীর সম্মিলন! প্রেসিডেন্ট হলেও আপনি দারুণ সংগীতশিল্পী। আশা করি, এই উপহার (একতারা) আপনার কাছে বাংলাদেশকে মনে করিয়ে দেবে। এটি প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি করা। এটাই আমার স্টাইল।’
এসব বলতে বলতে নিজের স্টুডিওর অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র দেখাতে থাকেন প্রেসিডেন্টকে।
বিদায়ের আগে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একটি কলম উপহার দিয়েছেন রাহুল আনন্দকে। রাহুল প্রতিশ্রুতি দেন, কলমটি দিয়ে তিনি নতুন গান লিখবেন। তখন বেশ খুশি হয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আপনার গানের জন্য আমি অপেক্ষা করবো।’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে অটোগ্রাফ চেয়ে নিয়েছে রাহুল আনন্দ ও উর্মিলা শুক্লার ছেলে তোতা।
ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাসায় যাবার জন্য গানের দল ‘জলের গান’-এর সংগীতশিল্পী রাহুল আনন্দকে অনেক অভিনন্দন জানিয়েছেন।যেকোনো দেশে সফরকালে স্থানীয় সংস্কৃতি উপভোগ করেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এর অংশ হিসেবে ঢাকায় আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের তত্ত্বাবধানে রাহুল আনন্দের স্টুডিও পরিদর্শন করলেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ঢাকার পরিচালক ফ্রাঁসোয়া গ্রোজ্যঁ।