শিরোনাম
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে দলটির নেতাকর্মীরা অস্ত্র মজুত করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রবিবার সকাল ১১টার দিকে রাজধানীতে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) খোন্দকার নুরুন্নবী এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার ছাত্রদলের ছয় নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি জানান, বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখাসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখাগুলো রাজপথে শক্তির মহড়া দিতে অস্ত্র সংগ্রহ করছে। এর মাধ্যমে তারা জনমনে ভীতি এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চায়। সরকারকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় এক নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে‒ এমন খবরে তাকে খুঁজতে বের হয়ে আরও পাঁচ নেতার হদিস মিলছিল না বলে অভিযোগ করে বিএনপি। এরপর শনিবার দিনভর এটা নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় জানিয়ে আসছিলেন বিএনপি নেতারা। পরে শনিবার রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওই ছয়জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন‒ ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম ওরফে জিসান (৩১), ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মো.আরিফ বিল্লা (৩০), ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান ওরফে হাসান (৩২), ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাদত হোসেন (৩১), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর (৩২) ও ছাত্রদলের ঢাবি শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.আব্দুল্লাহ আর রিয়াদ (২৯)। তাদের কাছ তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
তাদের গ্রেপ্তার সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম লালবাগ থানাধীন বাসা নং- ৩৮/১/এ এর তৃতীয় তলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে শনিবার তিনটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৬ রাউন্ড গুলিসহ ছয়জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি বলেন, 'গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে আমরা কয়েকটি মোবাইল জব্দ করেছি। তাদের মোবাইলেও বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া উদ্ধারকৃত অস্ত্রের ছবিও মোবাইলে পাওয়া গেছে। অস্ত্রগুলোর মধ্যে একটি অস্ত্র টেকনাফ থেকে সংগ্রহ করেন তারা। আর দুটি অস্ত্র পাবনা থেকে সংগ্রহ করেছে। যাদের কাছে থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করেছে তাদের নাম-ঠিকানাও পেয়েছি। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।'
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তারা আগামী নির্বাচনে সন্ত্রাস ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাতে এই অস্ত্র সংগ্রহ করেন। তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। আজ আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। এতে আরও অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয় শুক্রবার এই ছাত্রদলের নেতাদেরকে ডিবি তুলে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, 'মামলার এজাহারে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে সেভাবেই আমরা তাদের গ্রেপ্তার করেছি এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।'
সরকারি দলের অনেক নেতাকর্মী অস্ত্রসহ অনেক সময় ধরা পড়ে বা তাদের দেখা যায়, তাদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা‒ এমন প্রশ্ন করা হলে ডিবির এই কর্মকর্তা বিষয়টি এড়িয়ে যান।