১/১১ সরকার বাধা দিলেও দেশে এসেছি: প্রধানমন্ত্রী

ফানাম নিউজ
  ১৬ জুলাই ২০২৩, ১৬:৪৪
আপডেট  : ১৭ জুলাই ২০২৩, ০১:৫৬

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ওয়ান ইলেভেনের সরকার আমাকে গ্রেপ্তার করে। তার আগে আমি বিদেশে গেলে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেয়, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। মামলা মোকাবিলা করতে আমি দেশে আসতে চাই। আমাকে এয়ারপোর্টে ঢুকতে দেবে না বলে ঘোষণা দেয়। এমনকি বিদেশের এয়ারপোর্টগুলোতেও বাধা দেয় যেন আমাকে টিকেট না দেয়। কিন্তু আমি আন্তর্জাতিকভাবে জনমত তৈরি করেছি দেশে ফিরেছি। আমার উদ্দেশ্য ছিল আমাকে যেহেতু মিথ্যা মামলা দিয়েছে আমি তা দেশে গিয়ে মামলা মোকাবিলা করব, কোর্টে যাব।

তিনি আরও বলেন, দেশে ফিরে ১৬ জুলাই আমাকে গ্রেপ্তার করে। ১৭ জুলাই আমার কাছে আমার সম্পদের হিসাব চায়। তখন আমি বললাম আমাকে জেলে রেখে সমস্ত কাগজ বাসা থেকে নিয়ে গিয়ে সম্পদের হিসাব চাও।

রবিবার (১৬ জুলাই) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অধ্যক্ষ সম্মেলনে এসব কথা বলে তিনি। সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন-শিক্ষামন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনিসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষক প্রতিনিধি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১/১১ সরকার আমাকে জেলখানায় রেখে নানা প্রলোভন দেখায়। নানা প্রস্তাব দেয়। ব্রিগেডিয়ার আমিন আমাকে তত্ত্বাবধায় সরকারের পক্ষে প্রস্তাব দিয়ে বলে আপনি নির্বাচন করবেন না। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। আপনাকে প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা দেয়া হবে। আমি তাকে একটি কথাই বলেছিলাম, ওই প্রধানমন্ত্রী মর্যাদা মানে এসি গাড়ি, এয়ার কন্ডিশন বাড়ি-এগুলোতো? এগুলো আমার প্রয়োজন নেই। ‌

আমি ব্রিগেডিয়ার আমিনকে বলি, যে আপনি আপনার সেনাপ্রধানকে বলবেন " আপনার ( মঈন ইউ আহমেদ) ১৯৫৪ সালে জন্ম। আর আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৫৪ সালে মন্ত্রী ছিলেন। মিন্টো রোডেই আমাদের বাসা ছিল। সুতরাং ক্ষমতার মধ্যেই আমরা ছিলাম। তাই ওই ক্ষমতার লোভ আমাকে দেখিয়ে লাভ নেই। আমি একটাই চাই- আর সেটা হল নির্বাচন। পরে তারা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছিল। সেই নির্বাচনে আমরা সরকার গঠন করে একটানা তিন মেয়াদ রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ক্ষমতার জন্য এদেশে আমি আসিনি। আমি এসেছি এদেশের মানুষের ভাগ্য করতে। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুনির্দিষ্ট সময়ে বাংলাদেশকে উন্নত করতে সক্ষম হয়েছি। জাতির পিতা রেখে গিয়েছিলেন স্বল্পোন্নত দেশ। ২০২০ সালের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী, ২০২১ সালে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি। তখনই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পায়। নির্বাচনী ওয়াদা আমরা রক্ষা করি।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ শিক্ষিত হোক, এটা বিএনপি-জামায়াত জোটের কখনোই ইচ্ছা ছিল না। মানুষকে পদদলিত করে রাখা, অন্ধকারে রাখা এবং তাদের শোষণ করে রাখাই তাদের লক্ষ্য। নিজেরা অবৈধ সম্পদের মালিক হবে- এটাই বোধহয় তাদের চেষ্টা।

বিএনপির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশে ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত। তারপর ভুয়া ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা। পাঁচ বার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন। ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা। যার ফলে ইমার্জেন্সি ডিক্লেয়ার হয়। আর সেই ইমার্জেন্সিতে সবার আগে গ্রেপ্তার করা হলো আমাকে। আজকে সেই দিন। আমি আত্মবিশ্বাস হারাইনি। আমরা সবসময় ন্যায় ও সত্যের জন্য সংগ্রাম করেছি।