শিরোনাম
#বাড়তি দামে অসন্তুষ্ট ক্রেতা
#লোকসানের শঙ্কায় বিক্রেতা
কুরবানির পশু কেনাবেচার শেষ দুদিনে বেশ জমে উঠেছে ঢাকার পশুর হাটগুলো। এবার দুই সিটিতে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে মোট ১৯টি পশুর হাট বসানো হয়েছে। আজ বুধবার কেনাবেচার শেষ দিন। চলবে গভীর রাত পর্যন্ত। গতকালও হাটগুলোতে মোটামুটি কেনাবেচা হয়েছে। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে বৃষ্টি। গত দুই দিনের বৃষ্টির ফলে গতকাল বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে হাটগুলোতে। বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি হয়েছে কাদা। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গরুর খড় ও গোবর। তাই ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই পড়েছেন বিপাকে। বৃষ্টির ফলে বেশ কিছু গরু অসুস্থ হয়ে পড়ায় দাম কমে গেছে কিছুটা। তাই ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে যারা গরু কিনছেন, তাদের প্রায়ই সবার হাতেই মাঝারি ও ছোট সাইজের গরু। এবার হাটে বড় গরু তেমন একটা বিক্রি হচ্ছে না।
গতকাল দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। দেখা গেছে, সোমবার থেকে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে কুরবানির পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে হাটে আসা ক্রেতারাও পড়েছেন ভোগান্তিতে। কোনো কোনো হাট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। হাঁটু পানিতে রাখা হয়েছে গরু। ক্রেতাদের হাটে ঘুরতে হচ্ছে কাদা পেরিয়ে। সব মিলে বৃষ্টিতে নাকাল গরুর হাট। বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা পেতে অনেক ব্যবসায়ী বালুর বস্তা বিছিয়ে তার উপর গরু রাখছেন। অনেকে আবার ত্রিপল, ভারী পলিথিন দিয়ে গরুকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। গরু বেপারিরা জানান, আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় ক্রেতা সমাগম কম। যারা হাটে আসছেন তারা দাম জানতে চেয়ে চলে যাচ্ছেন। তবে আবহাওয়া ভালো হলে আবার কেনাবেচা জমে উঠবে বলে আশা তাদের।
দুপুরে মেরাদিয়া হাটে দেখা যায়, বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাকে করে গরু, ছাগল, মহিষ নিয়ে হাটে এসেছেন বেপারিরা। যারা কেনার জন্য হাটে এসেছেন পরিবেশ দেখে তাদের অনেকেই পশু না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন। তারা বলছেন, বৃষ্টি কমলে হাটে আসবে। ততক্ষণে দামও কমতে পারে বলে আশা তাদের। তবে হাটের ভেতরের অংশে গরু-ছাগল খুব একটা বেচাকেনা না হলেও বাইরের অংশে অর্থাৎ সড়কের দুই পাশে রাখা গরু-ছাগল বিক্রি হতে দেখা গেছে।
রাজধানীর কমলাপুর হাটেও একই অবস্থা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের আপ্রাণ চেষ্টার পরেও কেউই রক্ষা পায়নি। বিক্রেতা, ক্রেতা-দর্শনার্থী সবাই ভিজেছেন। বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ায় ইতোমধ্যে অনেক গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। হাটে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে গরুর জ্বরের ওষুধও নিতে দেখা গেছে।
এদিকে কোথাও কোথাও হাঁটুপানির সঙ্গে পশুর মল-মূত্র মিশে যাওয়ায় হাটে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। একই সঙ্গে, গত দুদিনে বেড়েছে মশার উপদ্রবও। একদিকে বৃষ্টির বাগড়া, সঙ্গে মশার উপদ্রব। হাটটিতে ঝিনাইদহ থেকে আসা ব্যবসায়ী ইবরাহীম জানান, সোমবার ১০টি গরু নিয়ে হাটে এসেছি। প্রতিটি গরুর দাম গড়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। আসার
পর পর দুইটি বিক্রি হলেও এরপর বৃষ্টির কারণে ক্রেতারা আর দাম-দরও করেননি।খিলগাঁও রেলগেট সংলগ্ন মৈত্রী সংঘের হাটে জামালপুর থেকে ১৪টি গরু এনেছেন বেপারি ফজলুর রহমান। তিনি জানান, ৫টি গরু বিক্রি করেছি। ৯টি আছে। বৃষ্টির কারণে ৩টি গরুর ঠাণ্ডা লেগেছে। এখন আবহাওয়া এমন খারাপ থাকলে কম দামেই বিক্রি করে দিতে হবে।
আফতাবনগর হাটে দেখা গেছে, হাটের সীমানা ছাপিয়ে গরু চলে গেছে অনেক দূর। সেখানে হাঁটার রাস্তায়ও পানি জমে গেছে। বৃষ্টির মধ্যেই ভিজছে গরুগুলো। আশপাশে দোকান-পাট না থাকার কারণে পাইকারদের বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়ও কম। গরু রেখে আবার বেশি দূর যাওয়াও ঝুঁকি। দুপুরে অঝোর বৃষ্টিতে অনেক ব্যবসায়ীকে ভিজতে দেখা গেছে।