শিরোনাম
ঈদুল আজহা ঘিরে বাড়িতে ফেরা মানুষের কষ্ট কমাতে নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মেরামত করা হয়েছে ১১১টি কোচ। এরইমধ্যে সবকটি কোচ পাকশি ও লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, ঈদে ঘরমুখো মানুষদের নিরাপদে বাড়িতে ফেরার জন্য ৪৭ কর্মদিবসের মধ্যে ৯৬টি কোচ মেরামতের জন্য নির্দেশনা দেয় রেলওয়ে বিভাগ। এটি চলতি মাসের ২৬ জুনের মধ্যে হস্তান্তরের জন্য বলা হয়। এরপর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ শপ, জিওএইচ ও উৎপাদন মেশিন শপের স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রায় ৫০০ কর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রমে পুরোনো ও ড্যামেজ কোচগুলো মেরামত করে নতুন চকচকে করা হয়েছে। ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ মেরামত, চাকা মেরামতসহ ওয়েল্ডিং ও কোচের সিট মেরামত করে বগিগুলোতে লাগানো হয়েছে নতুন ফ্যান ও সিট। পর্যাপ্ত জনবল ও কাঁচামালের অভাবে কর্মযজ্ঞ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই টার্গেটের ৯৬টিসহ আরও ১৫টি কোচ হস্তান্তর করে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কারখানার ওয়েল্ডিং শ্রমিক ফরিদুল ইসলাম বলেন, মানুষ ঈদে এই কোচে করে বাড়ি ফিরবে এই ভালোলাগা থেকেই আমরা কষ্ট হলেও কাজ করেছি। আমাদের দম ফেলার সময় ছিল না। কাজের চাপ ছিল প্রচুর। তবুও আজ আমরা কাজ শেষ করে দিলাম, ভালো লাগছে।
সোলেমান নামে আরেক শ্রমিক বলেন, আমাদের ৯৬টি কোচের টার্গেট দেওয়া হয়েছিল। সময়ের আগেই আমরা তা রেডি করে দিয়েছিলাম। পরে আরও ১৫টি কোচ রেডি করেছি, যাতে মানুষ শান্তিতে ফিরতে পারে। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে পারে।
মেশিন অপারেটর সিহাব হোসেন বলেন, আমাদের আনন্দের জায়গা এই কোচগুলোতে মানুষ নিরাপদে বাড়ি ফিরবে। আমরা সর্বোচ্চ আউটকাম দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, আমাদের টার্গেট পূরণ হয়েছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সিএইচআর শপের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সোহেল রানা বলেন, ঈদ উপলক্ষে কয়েকটি মিটার গেজ কোচ টার্গেট ছিল আমাদের। সময়ের আগেই ডিভিশনে হস্তান্তর করেছি।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ শপ ইনচার্জ মোমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের ৯৬টি কোচের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ২২ তারিখেই ৯৬টির বেশি আউটটার্ন দিয়েছি আমরা। আজ সবশেষ একটা মিলে মোট ১১১টি কোচ হস্তান্তর করা হয়েছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের যে প্রত্যাশা আমাদের ওপরে আছে, সে প্রত্যাশা পূরণে কাজ করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের লোকবল অনেকটা সংকট রয়েছে। মোট ২৩ শতাংশ লোকবল আছে। সেই দিক থেকে অনেক চাপ ছিল। আর ৫০০ দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক নিয়ে কাজ করেছি। আমরা চেষ্টা করছি যেন এই কোচগুলোতে নিরাপদে মানুষজন ফিরতে পারে।
জিএইচ শপের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা অল্প জনবল নিয়ে সকাল ৭টা থেকে বিকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কাজ করেছি। ঈদে মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি। এজন্য নিজেকে ধন্য মনে করছি।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান বলেন, শ্রমিকরা উৎফুল্ল হয়ে কাজ করেছেন। ৯ মে থেকে ২৬ জুন ৪৭ কর্মদিবসের মধ্যে আমাদের টার্গেটের চেয়ে বেশি কোচ হস্তান্তর হয়েছে।