শিরোনাম
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ভাইরাল হওয়া সোহেল মিয়া ওরফে বকুলের প্রথম স্ত্রীর খবর প্রকাশে নিজের সংসার ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী রওশন।
গণমাধ্যম ও সোহেলের প্রথম স্ত্রীর প্রতি হাত জোড় করে রওশন অনুরোধ করেছেন, দয়া করে আমার সুখের সংসারটি ভাঙবেন না।
রওশন বলেন, ‘সোহেলের আগের বিয়ে নিয়ে আমি কিছুই জানতাম না। তা নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথাও নেই। তবে আমার সংসার এখন ভাঙার পথে।’
সোহেল মিয়ার প্রথম স্ত্রী শুরাতন বেগমের উদ্দেশে রওশন বলেন, ‘আমার সংসারটা ভাঙবেন না। আমি আপনার মতো সুস্থ না। আমি একজন প্রতিবন্ধী মেয়ে। যদি আপনারা আসতে চান আসুন। আমি হাসিমুখে বরণ করে নেব। যদি আপনারা আসতে চান আসুন। এখন বলছেন উনি আপনার স্বামী। তা হলে সে (বকুল) হারানোর সময় থানায় জিডি করলেন না কেন? হারানোর কথা সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানাতে পারতেন। তাও তো করলেন না।’
সোহেল-শুরাতন দম্পতির বড় ছেলে সিহাব উদ্দীনকেও নিজের সংসারে স্বাগত জানান রওশন।
বলেন, ‘তুমি যদি আসতে চাও বাবা, আমি তোমাকে হাসিমুখে বরণ করে নেব। তুমি কি আসবা? শুনেছি তুমি দোকানদারি করো, আমিও দোকানদারি করি৷ আসতে চাইলে চলে আসো। সবাই একসঙ্গে দোকানদারি করি।’
প্রথম স্ত্রীকে ফেলে ময়মনসিংহে এসে দ্বিতীয় বিয়ে করা স্বামী সোহেলের পক্ষই নিলেন রওশন।
বললেন, ‘আমার স্বামী কী অন্যায় করেছে, অপরাধ করেছে সেটি বিষয় না। আমাকে সে ভালোবাসে, আমিও তাকে ভালোবাসি। আমাদের ১৫ বছরের সংসারে সে আমাকে ছেড়ে কোথাও যায়নি। তার আগে কী করল, না করল এগুলো গণমাধ্যমে কেন আনতেছেন? সে তো আমাকে ভালোবেসে ১৫ বছর ধরে পড়ে আছে। ধনসম্পদ কোনো কিছু তাকে দিতে পারিনি। শুধু ভালোবাসাই আমাদের সম্বল। আমার স্বামীর হয়ে সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। ও যদি শত অন্যায়ও করে ওই পরিবারের কথায় গণমাধ্যমে আর সংবাদ প্রকাশ করবেন না। তা হলে আমার সংসারটা ভেঙে যেতে পারে। আমি প্রতিবন্ধী মানুষ, আমি আমার স্বামীকে নিয়ে থাকতে চাই।’
উল্লেখ্য, বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভাইরাল হয় রওশন-সোহেল দম্পতির ভালোবাসার কাহিনি। ময়মনসিংহের ত্রিশালের প্রতিবন্ধী স্ত্রী রওশন আরাকে ঘাড়ে নিয়ে চলাফেরা করে খ্যাতি অর্জন করেন সোহেল।
তিনি জানিয়েছিলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হলে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে পড়ে। ত্রিশালের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকতারুজ্জামানকে তার পক্ষ থেকে উপহারসামগ্রী প্রদান ও খোঁজখবর নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এরই মধ্যে জানা যায়, মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন সোহেল। তার নাম সোহেল নয়; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তো দূরের কথা অষ্টম শ্রেণির বেশি পড়ালেখা করেননি তিনি।
তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের শামপুর গ্রামের চা দোকানি। তার নাম মোকলেসুর রহমান বকুল।
প্রায় ২০ বছর আগে একই ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামের সাজ্জাদ আলীর মেয়ে শুরাতন বেগমকে বিয়ে করেন বকুল। অনেক ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় বকুল প্রায় ১৫ বছর আগে এলাকায় স্ত্রী-সন্তানদের রেখে চলে যান। যাওয়ার পর তাদের খোঁজখবর রাখেননি।
এ ব্যাপারে সোহেল মিয়া ওরফে বকুল বলেন, মিথ্যার আশ্রয় নেওয়ায় আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নই। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানকে ফেলে ত্রিশালে এসেছি। এখন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাকে আমার মতো থাকতে বলেছে।
সূত্র: যুগান্তর