শিরোনাম
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ছাত্রলীগ নেতাদের সেলফি তোলা নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় দায়িত্বে থাকা পুলিশের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বুধবার হাজতখানার ভেতর থেকে মোবাইল ফোনে আসামিরা একটি সেলফি তুলে ফেসবুকে ভাইরাল করার অভিযোগ উঠে।
এ বিষয় দায়িত্বে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কোর্ট পুলিশের দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক মারুফ আহমেদ।
জানা যায়, প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী প্রচারণার সময় বরগুনার বামনা উপজেলার বামনা সদর ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র প্রার্থী তারিকুজ্জামান সোহাগ ও বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। উভয়পক্ষের অন্তত শতাধিক কর্মী আহত হন।
ওই সময় পুলিশের দায়ের করা মামলায় কারাগারে যান স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহাগ। পরে তার স্ত্রীর সহায়তায় সেখানে থেকেই বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হোসেন জনিকে প্রধান আসামি ও সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়াকে দুই নম্বর আসামি করে ২৭ জনের নামে মামলা দায়ের করেন সোহাগ।
সেই মামলায় বুধবার তারা বামনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মজুমদারের আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এ সময় আসামিদের জেলহাজতে নেওয়ার আগে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। আদালতের হাজতখানায় আসামিদের সঙ্গে কোনো প্রকার ধাতব বস্তু, ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস নেয়ার অনুমতি না থাকলেও কোর্ট পুলিশের স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে আসামিরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করেন।
ওই ফেসবুক পোস্টে দেখা যায়, বুধবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের সময় তিনটি ছবি ছাত্রলীগ সভাপতি তার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে লিখেন- ‘নৌকার নির্বাচন করতে গিয়ে কারাবরণ করতে হলো আমাদের’।
ছবিতে দেখা যায়- প্রথম ছবিটি (সেলফি) জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার মধ্যে বসেই তুলেছেন সভাপতি শাহরিয়ার, তার সঙ্গে রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক জনি। বাকি দুটি ছবির একটি তুলেছেন হাজতখানার মধ্যে থেকে, আর একটি ছবি আদালতের বিচারকের এজলাসের কাঠগড়ায়।
মামলার বাদী তারিকুজ্জামান সোহাগ বলেন, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আদালতের এজলাস থেকে শুরু করে হাজতখানার মধ্যেও তারা মোবাইল নিয়ে সেলফি তুলছেন, ফেসবুকে আবার সেসব ছবি পোস্ট করছেন। আমি এখনো অনিরাপদ রয়েছি। অবশ্যই এসব বিষয় প্রশাসন বিবেচনা করবেন।
এ বিষয়ে আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মারুফ আহমেদ বলেন, হাজতখানার ভিতরে মোবাইল নিয়ে সেলফি তোলার কোনো সুযোগ নেই। হাজতখানার দায়িত্বে যেসব পুলিশ সদস্যরা ছিলেন তাদের গাফলতি থাকতে পারে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র: যুগান্তর