টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের নিতে হচ্ছে বিনামূল্যের মাস্ক

ফানাম নিউজ
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:৪৩

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যের মাস্ক কিনতে হয়েছে টাকা দিয়ে। “জীবন রক্ষাকারী মাস্ক” টাকা দিয়ে ক্রয় করায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে সচেতন মহলে। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মাঝে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে। সূত্র: আরটিভি

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মহামারি করোনা শুরুর পর থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। জেলার সর্বত্র সচেতনতামূলক প্রচারণা, বিনামূল্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করা হয়। জেলা সদরসহ ১০ উপজেলায় সমাজের নানা শ্রেণি পেশার মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য বিনামূল্যে পর্যাপ্ত পরিমান মাস্ক দেওয়া হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খোলার ঘোষণা হলে সকল বিদ্যালয়ে শিশুদের জন্য মাস্কসহ অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করার আদেশ দেয় প্রশাসন।

এরই আলোকে জেলার আটপাড়া উপজেলায় ১০৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঝে যে সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মাস্কের ব্যবস্থা করেনি, তাদেরকে উপজেলা থেকে মাস্ক কেনার জন্য নির্দেশনা দেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। তারপর উপজেলার প্রায় ৪০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ মাস্ক কিনতে বাধ্য হয়। আর প্রতিটি মাস্কের মূল্য ধরা হয় ১৭ টাকা করে। কোনো বিদ্যালয়ে ৫০টি আবার কোনো বিদ্যালয়ে ১০০টি করে মাস্ক কিনতে হয়েছে শিক্ষকদের। এতে করে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সচেতন মহলে।

উপজেলার গাভুর কাছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মেঘারকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের মুখে লাগানে রয়েছে সবুজ রঙের মাস্ক। ওই সমস্ত মাস্কের গায়ে লেখা রয়েছে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন সৌজন্যে আটপাড়া উপজেলা প্রশাসন।

এই সকল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে কথা বললে তারা জানিয়েছে, উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অফিসের নির্দেশে আমরা গত ১০ সেপ্টেম্বর মাস্ক কিনতে বাধ্য হয়েছি। কোনো শিক্ষক ৫০টি এবং কেউ ১০০টি মাস্ক কিনেছে। প্রতিটি মাস্কের মূল্য ধরা হয়েছে ১৭ টাকা করে। তবে তারা বলছে বিষয়টি নিয়ে এখনও সমালোচনা চলছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেলিমা আক্তার খাতুনের অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে অফিসে গেলে সেখানে তালা ঝুলতে দেখা যায়। মোবাইল ফোনে তিনি নিউজকে জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে টাকা নিয়ে মাস্ক দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা সুলতানা  নিউজকে জানিয়েছেন, উপরের নির্দেশ ছাড়া কথা বলতে পারব না।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান  নিউজকে জানিয়েছেন, মহামারি করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নানা শ্রেণি পেশার মানুষকে বিনামূল্যে মাস্ক দেওয়া হয়েছে। টাকার বিনিময়ে মাস্ক দেওয়ার জন্য বলা হয়নি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।