শিরোনাম
স্বামীসহ এক ছাত্রীকে মারধরের প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘর-বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা দুটি বাড়িতে ও একটি ক্লাবে হামলা ও ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে সহপাঠীকে মারধরের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক কিছু সময়ের জন্য অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, চরকাউয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার সাইদুল আলম লিটনের অনুসারী জাহিদ হোসেন জয় নামের এক যুবক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের প্রায়ই উত্যক্ত করত। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক ছাত্রী তার স্বামীকে নিয়ে ঘুরতে গেলে আটকে রেখে স্থানীয় যুবক জয়ের নেতৃত্বে লাঞ্ছিত ও মারধর করা হয়।
ঘটনা জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শেখ রাসেল পাঠাগার নামে একটি সংগঠনের কার্যালয় ভাঙচুর করে। পরে ইউপি সদস্য লিটন ও তার অনুসারী জয়ের ঘর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রকিকুল ইসলাম ইয়ামিন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই আনন্দ বাজার এলাকায় এক শিক্ষার্থী তার স্বামীকে নিয়ে ঘুরতে যায়। এ সময় তাদের সাথে অশোভন আচরন করে মেম্বার লিটনের অনুসারী জয়সহ কিছু লোক। এরপর ছাত্রীর স্বামীকে মারধর শুরু করে তারা। পরে ওই ছাত্রীকেও মারধর করা হয়। বিষয়টি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
সৈকত নামে আরেক শিক্ষার্থী জানান, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক ছাত্রী ও তার স্বামীর সাথে এই ঘটনা। আমরা তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি। তবে কারা ঘর বাড়ি ভাঙচুর করেছে তা জানি না। আমরা লিটন ও জয়কে গ্রেফতারের জন্য ১২ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করা না হলে বড় আন্দোলন করা হবে।
ইউপি সদস্য সাইদুল আলম লিটনের পিতা বৃদ্ধ আলতাফ হোসেন হাওলাদার বলেন, কোনো কিছু বোঝার আগেই আমার ঘরে হামলা করছে, ভাঙচুর করছে। আমি বার বার কইছি বাচাও, কেউ কথা শুনেনাই। আমি বুড়া মানুষ, আমার পিঠেও দুইটা ঘুষি দেছে।
লিটনের মা নুরজাহান বেগম ও ভাই ফারুক হোসেন বলেন, অতর্কিত হামলা করা হইছে আমাগো ঘরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলাপান এইয়া করছে। লিটনেরও খোজ নাই আমাগো ধারে।
জাহিদ হোসেন জয়ের মা জোসনা বেগম বলেন, আমার ছেলে কিছুই জানে না। এর আগেও আমাগো ঘর ভাঙচুর হইছে। আমারে একজনে ফোন দিয়া কইছে আপনে ঘর দিয়া বাইরান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা যাইতে আছে ঘর ভাঙতে। ২-৩শ পোলাপান আইয়া আমার ঘরের টিভি, ফ্রিজ, আলমিরা ভাঙছে। স্বর্ণ ও নগদ টাকা পয়সা লুটপাট কইরা নেছে। আমরা জিম্মি, এইসব পোলাপান পড়ালেখা করতে আয় না গুন্ডা হইতে আয় বুঝিনা।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর খোরশেদ আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ঘটনাস্থল ও সড়ক থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। লিটন মেম্বর জনপ্রতিনিধি সুলভ আচরণ করেন নাই। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। শিক্ষার্থীরা কিছু দাবী করেছেন, সেগুলো আমরা দেখছি। ভাঙচুরের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
বরিশাল বন্দর থানা পুলিশের ওসি মো: আসাদুজ্জামান বলেন, পুরো বিষয়টি আমরা জেনেছি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।