শিরোনাম
সেই ছোটবেলা থেকেই আগলে রাখতেন ছেলে সাব্বিরকে। সে এখন একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তারপরও সাব্বিরকে একা ছাড়তেন না মা শাহনাজ। সবসময় ছেলেকে চোখে চোখে রাখতেন। ছেলেকে নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন।
কিন্তু সেই ছেলে এখন হারিয়ে গেল নদীর গর্ভে। সেইসঙ্গে মা শাহনাজের স্বপ্নও নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেলো। নদীর পাড়েই ছেলের জন্য আহাজারী করছেন। ক্ষণে ক্ষণে নদীর দিকে দৌড়ে যাচ্ছেন যেন নিজেই গিয়ে ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসবেন।
শাহনাজ বিলাপ করতে করতে বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলেকে দেখেশুনে রাখতাম। আমার ছেলের মাঝে আমার সকল স্বপ্ন লুকিয়ে রেখেছিলাম। স্বপ্ন দেখছিলাম আমার ছেলে একদিন বড় কিছু হয়ে আমার মুখ উজ্জ্বল করবে। ছেলেই আমার সম্পদ ছিল। কখনও একা ছাড়িনি তাকে। যেন খারাপ ছেলেদের সঙ্গে মিশে নষ্ট না হয়ে যায়। সেই ছেলেকে আজ আমি হারিয়ে ফেললাম।
তিনি বলেন, আমার এই কষ্ট কে দেখবে? আমি কাকে নিয়ে বাঁচবো? আমার বেঁচে থাকার সম্বল হারিয়ে গেছে। আগামীকাল থেকে তার পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। তার কলেজ নারায়ণগঞ্জ কমার্স কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। কিন্তু জানতাম না আমার ছেলে আর ফেরত আসবে না। তাহলে আজ তাকে একা ছাড়তাম না। আমিও তার সঙ্গে চলে যেতাম।
সাব্বিরের সহপাঠী শাওন বলেন, সাব্বির অনেক ভালো ছাত্র ছিল। তার মাঝে কখনও খারাপ কিছু দেখিনি। তার সঙ্গে সবসময় তার মাকে দেখতাম। মাকে নিয়ে তার অনেক স্বপ্নের কথা বলতো। আজ আমরা তাকে হারিয়ে ফেললাম।
এর আগে বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকালে ফতুল্লার বুড়িগঙ্গা নদীর ধর্মগঞ্জ গোদারাঘাট এলাকায় লঞ্চের ধাক্কায় ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিখোঁজ ৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে সাব্বিরও রয়েছেন। এখনও তার হদিস পাওয়া যায়নি।
সূত্র: জাগো নিউজ