শিরোনাম
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের এলাকায় জামায়াত-শিবির হানা দিয়েছে। ইউপি নির্বাচনে দুইজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনি ফসল ঘরে তুলেছে তারা। চতুর্থ দফা ইউপি নির্বাচনে সিলেটের বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জের ২০টি ইউনিয়নে রোববার নির্বাচন হয়।
বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৬ আসন। এই আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ-সদস্য ও সরকারের দুই মেয়াদে টানা এক দশক শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। এছাড়াও তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যও। চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে তার নির্বাচনি এলাকায় আওয়ামী লীগের চরম ভরাডুবি হয়েছে। দুই উপজেলায় ২০টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ৭টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। জামানত হারিয়েছেন নৌকার ৪ প্রার্থী। নির্বাচনি ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, অধিকাংশ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ই আসতে পারেননি। দুর্বল প্রার্থী, ভুল সিদ্ধান্ত ও তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থী পরিবর্তন করায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে অভিমত তৃণমূল নেতাকর্মীদের।
নুরুল ইসলাম নাহিদের নিজ এলাকা বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ফরিদ আল মামুন ও লাউতা ইউনিয়নে জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন জয় পেয়েছেন। গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলাম, লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মাহমুদ আহমদ চৌধুরী, লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী আব্দুল করিম খান ও বিয়ানীবাজার তিলপাড়া ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী এমাদ উদ্দিন জামানত হারিয়েছেন।
বিয়ানীবাজারে তৃণমূল আওয়ামী লীগের ভোটে পরাজিত হয়েও কেন্দ্র থেকে দলীয় প্রতীক নৌকা পাওয়া ৩ জন প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন জামানত হারিয়েছেন। ১৪ নভেম্বর তৃণমূলের ভোটে পরাজিত হন দুবাগ ইউনিয়নের আব্দুস সালাম, তিলপাড়া ইউনিয়নের এমাদ উদ্দিন ও মোল্লাপুর ইউনিয়নের শামীম আহমদ। কেন্দ্র থেকে তারা অলৌকিকভাবে নৌকার মাঝি হয়ে যান। কিন্তু তারা পরাজিত হন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান বলেন, নৌকার ভরাডুবি হয়েছে, এটা সঠিক। তবে এটা দলের ভরাডুবি নয়। তিনি বলেন, আগে জামায়াতের চেয়ারম্যান একজন ছিল, এবার দুইজন হয়েছে। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। এজন্য দলীয় কোন্দল ও সঠিক প্রার্থী বাছাই না হওয়া দায়ী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডজনখানেক মামলার আসামি আইনের ফাঁক-ফোকরে কীভাবে প্রার্থী হয়, আমার বোধগম্য নয়।
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি লুৎফুর রহমান বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে নানা হিসাবনিকাশ ও আঞ্চলিকতার কারণে এটা হয়েছে।
সিলেটের বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ, মৌলভীবাজারের সদর, রাজনগর, হবিগঞ্জের লাখাই, বানিয়াচং ও সুনামগঞ্জের দিরাই, বিশ্বম্ভরপুর ও জগন্নাথপুর উপজেলার ৮১টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ৪৭টি ইউনিয়নে নৌকা জয়লাভ করেছে। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়নে, রাজনগর উপজেলার ৮ ইউনিয়নের মধ্যে ৪টিতে, হবিগঞ্জের লাখাই ও বানিয়াচং উপজেলার ২০ ইউনিয়নের মধ্যে ১৩টিতে নৌকা বিজয়ী হয়েছে। সুনামগঞ্জের তিন উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে নৌকা জয়ী হয়েছে ৭টিতে।
সূত্র: যুগান্তর