শিরোনাম
সিলেটের একটি স্থানীয় দৈনিক ‘আমার হবিগঞ্জ’ পত্রিকায় বিএমডিসির সনদপ্রাপ্ত একজন নারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএমডিসির সনদপ্রাপ্ত সেই নারী চিকিৎসক ডাক্তার সায়মা আক্তার তালুকদার।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমের কাছে এই নারী চিকিৎসক এক প্রতিবাদ লিপির মাধ্যমে তার বার্তা পৌছে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
পাঠকদের কাছে এই নারী চিকিৎকের প্রতিবাদ লিপিটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
‘গত ১৪ ডিসেম্বর রোজ মঙ্গলবার ২০২১ ইং তারিখ দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় ‘সনদ ছাড়াই নিয়মিত রোগী দেখছেন কথিত ডাঃ সায়মা আক্তার তালুকদার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। উক্ত সংবাদে আমাকে জড়িয়ে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তা আদৌ সত্য নয়। মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। প্রকৃতপক্ষে আমি বৈধ মেডিকেল প্র্যাকটিশনার। আমার সাময়িক, চূড়ান্ত সনদপত্র ও বিএমডিসি এর রেজিস্ট্রেশন সনদপত্রের কপি আমার হবিগঞ্জের প্রধান প্রতিবেদক তারেক হাবিব এবং আজমিরীগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ দিলোয়ার হোসেন বরাবর প্রেরণ করেছি। কিন্তু তারা আমার প্রকৃত সনদপত্র ও রেজিস্ট্রেশন উল্লেখ না করে ভুল তথ্যের মাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছেন। এতে আমি ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও পেশাগত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। আমি যথারীতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কুমিল্লা সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই।
আমার সনদপত্রের রোল নং-৪৪৮ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিঃ নং-৯৯৭ এবং বিএমডিসি এর রেজিস্ট্রেশন সনদপত্র নং-১১২০৮৩, তারিখ ০৩-১০-২০২১ খ্রি হওয়ার বিষয় সংশ্লিষ্ট সকলের জ্ঞাতার্থে উল্লেখ্য করা হলো। আমার স্বামী সিলেট সরকারি পুলিশ হাসপাতালের একজন নিয়োগপ্রাপ্ত এমবিবিএস ডাক্তার। তার গ্রামের বাড়ি আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সদরে। আমরা উভয়ে সপ্তাহে একদিন শুক্রবার আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সদরে গরীব ও দুঃস্থ রোগীদের ফ্রি/স্বল্প ফি তে চিকিৎসা দিয়ে আসছি। এছাড়া "আমার হবিগঞ্জ" পত্রিকার সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে আমার কোন গ্রহণযোগ্য সনদপত্র নেই এবং সনদে একাধিক বানান ভুল রয়েছে। আমার সনদপত্র বৈধ, সঠিক ও শুদ্ধ। উক্ত পত্রিকায় আমার সম্পর্কে প্রকাশিত সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যেই এ ধরণের সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। যাহা আইনি বিচারের দাবি রাখে। আমি উক্ত মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
বিএমডিসির সনদপ্রাপ্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের প্রসঙ্গে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এর সদস্য ও বাংলাদেশের সময় পত্রিকার সম্পাদক ফাহিম আহমাদ বিজয় বলেন, ‘মফস্বল সাংবাদিকতা নিয়ে অনেক অভিযোগ আমরা নিয়মিত পেয়ে থাকি। বিএমডিসির সনদ সম্পর্কে অজ্ঞতা থাকার কারণেও সংবাদকর্মী হয়তো না বুঝেই সংবাদটি প্রকাশ করেছেন। সিলেটের "আমার হবিগঞ্জ" পত্রিকায় প্রকাশিত নারী চিকিৎসক সম্পর্কিত এই সংবাদটি পড়ে আমার মনে হয়েছে বিএমডিসি কর্তৃক সনদ যাচাই না করে অনুমানের ভিত্তিতে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে। যা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার নীতিশাস্ত্র পরিপন্থী।’
সম্পাদক ফাহিম আহমাদ বিজয় বলেন, ‘যেহেতু বিষয়টি স্পর্শকাতর। বিএমডিসি কর্তৃক ইস্যুকৃত সনদকে তাদের বক্তব্য ছাড়া ভুয়া বলে বিএমডিসিকেই অবমাননা করা হয়েছে। যাচাই না করে বিএমডিসি কর্তৃক প্রদান করা কোন সনদকে ভুয়া বলার এখতিয়ার কারো নেই। ভালো করে যাচাই করেই সংবাদটি প্রকাশ করা উচিত ছিল। এতে এই নারী চিকিৎসকের সম্মানহানি হয়েছে। সনদের বিস্তারিত তথ্য যাচাই করে যা মনে হচ্ছে প্রকাশিত সংবাদটির ভিত্তি খুবই দুর্বল। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করার নাম করে অপসাংবাদিকতা কখনোই গ্রহণযোগ্য না।’
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক ডাক্তার সায়মা তালুকদারের স্বামী ডাক্তার এনামুল হাসান নিলয় সিলেট সরকারি পুলিশ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক। সংবাদটি প্রকাশের পর থেকে এই ডাক্তার দম্পতিকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয় মফস্বল সাংবাদিক তারিক হাবিব ও "আমার হবিগঞ্জ" পত্রিকার আজমিরীগঞ্জ প্রতিনিধি দিলোয়ার হোসেন ফেসবুকে নানা ধরনের মানহানিকর অনুমান নির্ভর তথ্য উপস্থাপন করে কুৎসা রটাচ্ছেন বলেও গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন এই ডাক্তার দম্পতি।