শিরোনাম
খুলনায় বসবাসরত অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ম্যালকম আরনল্ডের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীসান মির্জা। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে অর্থকষ্টে থাকা ম্যালকম আরনল্ডের জন্য এক মাসের ওষুধ পাঠিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া তাঁর একটি ছবি কেনা বাবদ ১০ হাজার টাকাও দিয়েছেন।
শনিবার দুপুরে খুলনা নগরের সোনাডাঙ্গা এলাকায় ম্যালকমের ভাড়া বাড়িতে এই উপহারসামগ্রী পৌঁছে দেন খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গত ২০ নভেম্বর প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘বাংলাদেশে যেমন আছেন অস্ট্রেলিয়ার ম্যালকম’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে ম্যালকমের বর্তমান অসহায় অবস্থার চিত্র উঠে আসে।
শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি তুলে ধরা হয় ২০০৪ সাল থেকে বাংলাদেশে বসবাসরত ম্যালকমের জীবনের গল্প। ১৮ বছর আগে প্রথম বাংলাদেশে এসেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ম্যালকম আরনল্ড। পরে আবার বাংলাদেশে এসে হালিমা বেগম নামের এক নারীকে ভালোবেসে খুলনায় থেকে যান তিনি। বর্তমানে নগরের সোনাডাঙ্গা এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এই দম্পতি। তাঁদের দুঃখকষ্ট তুলে ধরে প্রথম আলোর প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর এগিয়ে আসছেন সংবেদনশীল মানুষ।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) সোনালি সেন বলেন, জীসান মির্জা বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি। একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনটি তাঁর নজরে এসেছে। এরপর তিনি ম্যালকমকে সাহায্যের জন্য এক মাসের ওষুধ কিনে দেন এবং তাঁর একটি ছবি কেনার জন্য টাকা পাঠান। এ জন্য কেএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ম্যালকমের বাড়িতে গিয়ে ওষুধ পৌঁছে দিয়েছেন এবং আর্থিক সাহায্য হিসেবে ১০ হাজার টাকা দিয়ে তাঁর আঁকা বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের একটি ছবি কিনে নিয়েছেন।
ম্যালকমের স্ত্রী হালিমা বেগম বলেন, মূলত ছবি এঁকে তা বিক্রি করে তাঁদের আর্থিক সংস্থান হতো। কিন্তু করোনার কারণে গত দুই বছর কোনো ছবিই বিক্রি হচ্ছে না। বিদেশে ছবি পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাঁরা বেশ অসহায় অবস্থায় আছেন। অন্যদিকে হৃদ্রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন ম্যালকম। আর্থিক সংকটের কারণে তাঁর ভালো চিকিৎসাও করানো সম্ভব হচ্ছে না। ছবি বিক্রি থেকে পাওয়া এই অর্থ ও ওষুধ তাঁদের বড় উপকারে আসবে বলে জানান তিনি।
উপহার পৌঁছে দিতে ম্যালকমের বাড়িতে গিয়েছিলেন কেএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার এস এম ফজলুর রহমান, উপকমিশনার (দক্ষিণ) আনোয়ার হোসেন, উপকমিশনার (সদর দপ্তর) এহসান শাহ, অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) সোনালি সেন ও সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক। এ সময় তাঁরা ম্যালকমের আর কোনো সাহায্য প্রয়োজন হলে তা পূরণ করার আশ্বাস দেন।
সূত্র: প্রথম আলো