শিরোনাম
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা ১৬ ঘণ্টার বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। মঙ্গলবার সকালেও একটানা বৃষ্টির ফলে সাতক্ষীরা শহরের অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কয়েক হাজার মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। তলিয়ে গেছে কয়েকশ হেক্টর ফসলের মাঠ।
জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম-সচিব আলী নূর খান বাবুল জানান, সাতক্ষীরা পৌরসভার তিন ভাগের দুই ভাগ এলাকা এখন পানিতে ডুবে আছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েকশ পরিবার। ভেসে গেছে কয়েক হাজার বিঘা মাছের ঘের, ফসলি জমি ও পুকুর।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কুশলিয়ার বাসিন্দা শাওন জানান, ভারি বৃষ্টিতে কালিগঞ্জ বাজার ও আশপাশের নিচু এলাকা পানিতে ডুবে গেছে।
জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক আনিছুর রহিম জানান, শহরের আশপাশের এলাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ দখল করে অপরিকল্পিত মাছের ঘের করার কারণে বর্ষা এলেই জলাবদ্ধতা হচ্ছে। এছাড়া পৌরসভার মধ্যে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই।
তিনি আরও বলেন, মৃতপ্রায় বেতনা নদীর তীরের ধুলিহর, ফিংড়ি, ব্রহ্মরাজপুর, লাবসা, বল্লী, ঝাউডাঙা ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে পানি অপসারণের কোনো পথ না থাকায় বৃষ্টির পানি বাড়িঘরে উঠতে শুরু করেছে। সাতক্ষীরা শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রাণসায়ের খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন হয় না।
শ্যামনগরে বাসিন্দা শরিফ উদ্দিন জানান, তাদের অধিকাংশ এলাকার মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে সাতক্ষীরার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মানুষের বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে রোববার বিকেল ৪টা থেকে সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগামীতে এমন বৃষ্টিপাতের আরও সম্ভাবনা রয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম জানান, ভারি বর্ষণে সদ্য রোপা আমন ও আউশ ধানের বীজ তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের জরিপ করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ শেষে তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এমএ বাসেদ বলেন, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলায় দুর্যোগ মোকাবিলায় ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও ৮৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ আছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে এ টাকা ও চাল বিতরণ করা হবে।