শিরোনাম
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এক প্রেসিডিয়ামের ১ প্রার্থী ও আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্যের ১১ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। নৌকা মার্কার এমন ভরাডুবিতে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লা ও আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।
তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলার ১২ ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে জয়ী ১১ জনই যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন সমর্থিত। মাত্র একজন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহর সমর্থিত।
রোববার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ভোটগ্রহণ শেষে গণনার পর এই তথ্য জানা গেছে। ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিমউদ্দিন খান প্রাথমিকভাবে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভাঙ্গা উপজেলায় নিক্সন চৌধুরী সমর্থিত স্বতন্ত্র বিজয়ীর চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- আলগী ইউনিয়নে ম.ম. ছিদ্দিক মিয়া, তুজারপুর ইউনিয়নে ওলিউর রহমান, কালামৃধা ইউনিয়নে রেজাউল মাতুব্বর, আজিমনগর ইউনিয়নে শাহজাহান হাওলাদার, মানিকদাহ ইউনিয়নে সহিদুল ইসলাম বাচ্চু, হামেরদী ইউনিয়নে খোকন মিয়া, ঘারুয়া ইউনিয়নে মনসুর আহম্মেদ মুন্সি, চুমুরদী ইউনিয়নে রফিকুল ইসলাম সোহাগ, নাসিরাবাদ ইউনিয়নে আলমগীর হোসেন, নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নে শাহবুর রহমান ও চান্দ্রা ইউনিয়নে খালেক মোল্লা।
আর কাজী জাফরউল্লাহর সমর্থিত নৌকা প্রতীকে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন- কাউলিবেড়া ইউনিয়নে রেজাউল হাসনাত দুদু।
নৌকা মার্কার প্রার্থীদের এমন ভরাডুবির বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের ভাষ্য, আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ভাঙ্গা উপজেলার নাম সর্বজনস্বীকৃত। এরপরও ২০১৪ সালের পর থেকে ভাঙ্গায় জাতীয় নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের একের পর এক ভরাডুবি হচ্ছে। ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন ২০১৪ সালে প্রথম নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই এই অঞ্চলে আওয়ামী রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয় বলে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও এলাকাবাসীরা মনে করেন।
স্থানীয় একাধিক নেতাদের অভিযোগ, এর আগে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করা ও মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে ভাঙ্গায় নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবির মূল কারণ।
অপরদিকে চরভদ্রাসন উপজেলায় ৩ ইউনিয়নেও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। চরভদ্রাসন ইউনিয়নে আজাদ খান, গাজীরটেক ইউনিয়নে ইয়াকুব আলী, চরহরিরামপুর ইউনিয়নে জাহাঙ্গীর কবীর।
নৌকা প্রতীকের এমন ভরাডুবিতে সমর্থকরা হতাশ হলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা জানান, নৌকা প্রতীক দেয়াই হয়েছে অযোগ্যদের। প্রতীক দেয়ার পরেই স্থানীয় নেতাকর্মীরা এমন ফলাফলের আশঙ্কা করছিলেন।
সূত্র: জাগো নিউজ