শিশু কল্যাণ কেন্দ্র বন্ধ, মাঠে সন্তান প্রসব

ফানাম নিউজ
  ১১ নভেম্বর ২০২১, ১০:৪৫

রংপুরের কাউনিয়ায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গেট বন্ধ থাকায় মাঠে সন্তান প্রসব করেছেন এক নারী। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সামনে সন্তান প্রসব করেন তিনি।

ওই প্রসূতি হারাগাছ ইউনিয়নের চরনাজিরদহ মফিজপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের স্ত্রী লিমা বেগম।

প্রসূতির স্বামী শাহাদত হোসেন বলেন, আল্লাহর রহমতে স্ত্রী ও সন্তান বেঁচে গেছে। আর কিছু সময় পার হলে দুজনেই মারা যেত। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রসব ব্যথা উঠলে বাড়িতে স্থানীয় দাই দিয়ে চেষ্টা করা হয়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে স্ত্রীকে নিয়ে আসি। কিন্তু মাতৃমঙ্গল কেন্দ্রে কোনো ডাক্তার ও নার্সকে পাইনি। কেন্দ্রের গেটে তালা ঝুলছে। পরে কেন্দ্রের ভবনের পাশে ঘাসের ওপর মেয়ে সন্তান জন্ম দেয় সে। রাত একটার দিকে অটোবাইকে করে স্ত্রী ও মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মিনাবাজার এলাকার রানা মিয়া বলেন, হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মাঝে মাঝে আসেন। অল্প সময় থেকে আবার শহরে চলে যান। ফলে সেবা নিতে আসা অনেক গর্ভবতী নারী বিপদে পড়ে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের আশেপাশে ঝোপঝাড়ে সন্তান প্রসব করেন।

আকবর আলী নামে আরেক জন বলেন, মা ও শিশুদের মৃত্যুহার কমাতে এবং নিরাপদ ও স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের জন্য পাশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রতিদিনেই টেলিভিশন ও পত্রিকায় প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এ অবস্থা। হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে রাতে কোনো লোক থাকে না। অথচ থাকার জন্য আলাদা ভবন রয়েছে।

এ বিষয়ে মা ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা জান্নাতুল ফেরদৌউস জানান, এখানে তিনি ও দুজন দাই দায়িত্বে আছেন। যদিও ২৪ ঘণ্টা গর্ভবতী নারীদের সেবা দেওয়ার কথা। কিন্তু তিনজনের পক্ষে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়া সম্ভব না। সপ্তাহে শনিবার-বৃহস্পতিবার ছয়দিন সকাল নয়টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত গর্ভবতী নারীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম জানান, দুই মাস আগে এ উপজেলায় যোগদান করি। যোগদানের পরেই হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকার ব্যাপারে অভিযোগ জানতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় উপ পরিচালক ডা. সাইদুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ ও স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে মা ও শিশু কল্যাণগুলো অসহায় দরিদ্র মানুষের আশ্রয়স্থল। কিন্তু জনবল সমস্যা রয়েছে। ফলে সেবা কিছুটা সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।

সূত্র: জাগো নিউজ