কক্সবাজারে হচ্ছে স্টেডিয়াম, গ্যালারিতে বসেই দেখা যাবে সমুদ্র

ফানাম নিউজ
  ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১৪:২৮

কক্সবাজার জেলায় আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট ও ফুটবল স্টেডিয়াম নির্মাণ করবে সরকার। নামকরণ করা হবে শেখ কামালের নামে। স্টেডিয়াম এমনভাবে নির্মাণ করা হবে যে, ক্রিকেট-ফুটবলের পাশাপাশি গ্যালারিতে বসে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্যও উপভোগ করা যাবে। একসঙ্গে বসে খেলা দেখতে পারবেন প্রায় ৫০ হাজার দর্শক।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জানায়, অন্য স্টেডিয়াম থেকে এটা হবে সম্পূর্ণ আলাদা। স্টেডিয়ামের নির্মাণশৈলীও হবে নান্দনিক। অন্য স্টেডিয়াম চারদিকে গোলাকার হলেও এর একপাশ থাকবে ফাঁকা। এমনভাবে নির্মিত হবে যেন গ্যালারির সব দর্শক খেলার পাশাপাশি সমুদ্রসৈকতের ঢেউ ও সারি সারি ঝাউবন দেখতে পান।

সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্টে স্টেডিয়ামটি নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। কক্সবাজারে থাকার ব্যবস্থা খুবই উন্নত। পাঁচতারকা মানের বেশ কয়েকটি হোটেলসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মানের প্রচুর হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউজ রয়েছে। এসব কারণেই মূলত আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল-ক্রিকেট স্টেডিয়াম হবে।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মুহাম্মদ সারওয়ার জাহান বলেন, কক্সবাজারে সৈকত ঘেঁষে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট ও ফুটবল স্টেডিয়াম কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। মূল প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে সমীক্ষা প্রকল্প চলমান। ডিসেম্বরে সমীক্ষা প্রকল্প শেষ হবে। সমীক্ষা প্রকল্পের গাইডলাইন দেখেই হাতে নেওয়া হবে মূল প্রকল্প।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জানায়, কক্সবাজারে স্টেডিয়াম কমপ্লেক্স নির্মাণের সম্ভাব্যতা জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হবে সম্ভাব্যতা জরিপ। এ কমপ্লেক্সের মধ্যে সবকিছুই থাকবে। স্টেডিয়ামের অন্য খালি জায়গায় দৃষ্টিনন্দন একাডেমিক ভবন, তারকামানের হোটেল, জিমনেশিয়াম, সুইমিং জোন তৈরি করা হবে। তখন এটি হবে দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় একটি স্টেডিয়াম। আর পর্যটক বাড়ার পাশাপাশি হোটেল-মোটেলসহ নানা ব্যবসার উন্নয়ন ঘটবে। পাল্টে যাবে কক্সবাজারের চেহারা।

সৌন্দর্য ও আয়তনে বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বের অন্যতম সেরা স্টেডিয়ামগুলোর একটি হবে কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। সাগরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য কাজে লাগিয়ে যেখানে প্রশংসা কুড়িয়েছে গল, ক্যান্ডি কিংবা ক্যারিবিয়ান স্টেডিয়ামগুলো, সেখানে বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত থাকার পরও পিছিয়ে বাংলাদেশ। এবার বোধহয় ঘুচতে চলেছে সেই আক্ষেপ।

সমীক্ষা প্রকল্পটি ৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকায় প্রাক্কলিত ব্যয়ে জানুয়ারি ২০২০ থেকে জুন ২০২১ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়। পরবর্তী সময়ে প্রকল্পটির ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত। ৮ আগস্ট ২০২১ তারিখে প্রকল্পের প্রশাসনিক আদেশ জারি করা হয়েছে। ক্রিকেট কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা মৌজায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কাছে ৪৯ দশমিক ১২ একর অকৃষি খাসজমি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুকূলে বন্দোবস্ত করার পর হস্তান্তর করা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলা স্টেডিয়াম ও দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলা স্টেডিয়ামের উন্নয়ন করা হবে। মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলা একটি বৃহৎ উপজেলা। বর্তমানে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর এ উপজেলাটি ঢাকার খুবই নিকটবর্তী দূরত্বে থাকবে। তাই ভবিষ্যতে উপজেলাটির গুরুত্ব বাড়বে। মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্য উপজেলার তুলনায় শ্রীনগর উপজেলায় খেলাধুলা অপেক্ষাকৃত বেশি হয়। শ্রীনগর উপজেলা স্টেডিয়ামে একটি পুরোনো গ্যালারি ও একটি একতলা ভবন রয়েছে। গ্যালারি ছোট হওয়ায় খেলা চলাকালীন দর্শক সংকুলান হয় না। অনেক দর্শককে দাঁড়িয়ে খেলা উপভোগ করতে হয়। তাছাড়া মাঠের পরিমাণ কম হওয়ায় পুরোনো ভবন ও গ্যালারি ভেঙে পরিকল্পিতভাবে একটি নতুন প্যাভিলিয়ন ভবন এবং গ্যালারি নির্মাণ করা প্রয়োজন।

অন্যদিকে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলা খেলাধুলায় অনেক অগ্রসর। কিন্তু উপজেলা স্টেডিয়ামটিতে দর্শকের তুলনায় গ্যালারি অপ্রতুল। এছাড়া অন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোরও ঘাটতি রয়েছে। স্টেডিয়ামটিতে নতুন গ্যালারি, সারফেস ড্রেন নির্মাণসহ খেলার মাঠ উন্নয়ন করা প্রয়োজন। ১১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে স্টেডিয়াম দুটির উন্নয়ন করা হবে।

সূত্র: জাগো নিউজ