বেড়েছে অন্তঃসত্ত্বা রোগীর চাপ, চিকিৎসক সংকটে ভোগান্তি 

ফানাম নিউজ
  ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১৪:৩৩

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে গাইনি বিভাগে নির্ধারিত সিটের (শয্যা) চেয়ে বেশি রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে ওয়ার্ডে ৪০ সিটের বিপরীতে ভর্তি হয়েছেন ১২০ রোগী। তার মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা রোগী আছেন ৫৫ জন। ১০০ শয্যার হাসপাতালে বাড়তি রোগীদের বারান্দা ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। সেবা গ্রহিতারা হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের কথাও বলছেন। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ৫০ চিকিৎসকের বিপরীতে মাত্র ১৯ জন কর্মরত আছেন। 

শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১০০ শয্যার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালটি জেলা শহরে অবস্থিত। ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় পুরুষ বিভাগের মেডিসিন, সার্জারি, অর্থোপেডিক, মহিলা বিভাগের গাইনি, অর্থোপেডিক, মেডিসিন, সার্জারিসহ ৯টি ওয়ার্ডে রোগীদের ৮০টি শয্যায় চিকিৎসা দেওয়া হয়। আর হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ২০ শয্যায় করোনার উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

তবে গত এক সপ্তাহে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ৮০ শয্যার বিপরীতে ১৭৬ জন রোগী ভর্তি আছেন।

অন্যদিকে হাসপাতালে ২৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মধ্যে ৯ জন কর্মরত আছেন। আর ২৬ জন চিকিৎসকের বিপরীতে আছেন ১০ জন। হাসপাতালটিতে ৫০ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে ১৯ জন চিকিৎসক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে ৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অন্তর্বিভাগে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রাবেয়া বেগম বলেন, গত শনিবার সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। সোমবার কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই বারান্দার মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। রাবেয়া বেগমের বাড়ি ভেদরগঞ্জ মনুয়া এলাকায়।

গোসাইরহাট উপজেলার সোনিয়া বেগম বলেন, আমার বোনের আজ ছেলে সন্তান হয়েছে। কোথাও সিট (শয্যা) পাই না। শয্যা না পেয়ে আশ্রয় নিয়েছি মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের বারান্দায়। এখানে কোনও ফ্যান নাই, প্রচণ্ড গরম। ছেলে বারবার ঘেমে যাচ্ছে। কী আর করবো, বাধ্য হয়েই আছি। 

ডামুড্যায় ধানকাটি এলাকা থেকে আসা হারুণ অর রশিদ জানান, তার বাবা গত রবিবার হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তার ক্যান্সার হওয়াতে কেমোথেরাপি দেওয়ার পর শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। এখানে আসার পর ডাক্তার নার্স কাউকে ঠিকমতো পাচ্ছেন না।

সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রাবেয়া বুশরা জানান, রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়া চিকিৎসা সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিছানা, চাদর পর্যাপ্ত না থাকায় ঝামেলায় পড়েছি, রোগীরাও হেনস্তা হচ্ছে। 

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মুনীর আহমেদ খান বলেন, গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। জ্বর, ঠাণ্ডা ও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী বেশি। আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার কারণে শিশু ও বয়স্করা অসুস্থ হচ্ছেন। অন্তঃসত্ত্বা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ডাক্তার কম থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন