শিরোনাম
বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে সার্ভিস বোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে কাঠের বোটে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণে যাওয়া প্রায় তিন শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন।
তবে আতংকের পরিবর্তে ফুরফুরে মেজাজে সময় কাটাচ্ছেন তারা। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিরাপদে রাখার ব্যবস্থার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের আধিক্য থাকায় চার সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর এবং নদী বন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বায়ুচাপের আধিক্যের পার্থক্য থাকায় সাগর উত্তাল এবং ঝড়ো হাওয়াসহ কক্সবাজারে বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে রোববার থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে সার্ভিস বোট চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সেন্টমার্টিনের সি প্রবাল রিসোর্টে উঠা পর্যটক ঢাকা মিরপুর এলাকার আবদু রহমান বলেন, গত ১৫ অক্টোবর পরিবার নিয়ে সেন্টমার্টিন বেড়াতে এসেছি। সোমবার রাতের ট্রেনে সিলেট ফিরে যাওয়ার টিকেট করা ছিল। কিন্তু রোববার থেকে দ্বীপের সার্ভিস বোট বন্ধ থাকায় দ্বীপেই আটকে আছি। ঠিক সময়ে ফিরতে না পারায় বাজেটের টাকায় টান পড়ে। তবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও অন্যরা থাকা খাওয়ায় কোনো সমস্যা হবে না বলে অভয় দিয়েছেন। ট্রেনের টিকেট লস ছাড়া তেমন কোনো সমস্যা নেই।
গত শুক্রবার ৪ সহকর্মী নিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে যাওয়া কিশোরগঞ্জের এনজিওকর্মী এনামুল হক বলেন, রোববারই আমাদের ফিরে যাবার কথা ছিল। কিন্তু বোট না চলায় ফিরতে পারিনি। আমাদের মতো বিভিন্ন হোটেলে প্রায় ৩ শতাধিক পর্যটক অবস্থান করছেন। আমরা হোটেল ছেড়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বাসায় উঠেছি আজ।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মুজিবুর রহমান বলেন, অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় অনেকে প্রতিবছর বর্ষা ও এ মৌসুমের সময়গুলোতে নিজস্ব নিরাপত্তায় সেন্টমার্টিন আসেন। এবারও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। পক্ষকাল আগে থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নিয়মিত সার্ভিস বোটে (কাঠের ট্রলার) অনেক পর্যটক সেন্টমার্টিন বেড়াতে আসছেন। এখন সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রায় ৩০০-৩৩০ জন পর্যটক রয়েছেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত রোববার থেকে সার্ভিস বোট চলাচল বন্ধ রেখেছে সংশ্লিষ্টরা। ফলে সিডিউল থাকলেও অনেকে ফিরে যেতে পারেননি।
সেন্টমার্টিনের সি প্রবাল রিসোর্টের মালিক আব্দুল মালেক বলেন, জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকলেও পর্যটকরা নিজস্ব নিরাপত্তায় স্পিডবোট ও ট্রলারে করে সেন্টমার্টিন এসেছেন। অনেকে রোববার, আবার কারো সোমবার ফেরত যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আবহাওয়া বৈরী হওয়ায় সেন্টমার্টিন থেকে কোনো ট্রলার বা স্পিডবোট ছেড়ে যেতে দেয়নি কোস্টগার্ড। রিসোর্টেও অবস্থান করা পর্যটকরা নিরাপদে রয়েছেন।
কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের সেন্টমার্টিন স্টেশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হোটেল ও এলাকার জনপ্রতিনিধিদের বরাতে জানতে পেরেছি ২৫০ থেকে ৩৩০ জনের মতো পর্যটক দ্বীপে অবস্থান করছেন। কারো রোববার, আবার কারো সোমবার এবং কারো মঙ্গলবার ফিরে যাবার কথা ছিল। বৈরী আবহাওয়া কেটে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের টেকনাফে পাঠানো হবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, মৌসুম না হলেও নিজস্ব নিরাপত্তায় কয়েকশ পর্যটক সেন্টমার্টিন গেছেন বলে খবর পেয়েছি। বৈরী আবহাওয়ায় আটকা পড়ার পরই এটি প্রচার পেয়েছে। আমরা পর্যটকদের খোঁজ-খবর নিয়েছি এবং নিরাপদে থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সূত্র: যুগান্তর