শিরোনাম
মাদারীপুরের শিবচরে ডাকাতি করতে গিয়ে জনতার পিটুনিতে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ভোরে উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের সম্ভুক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন- শিবচরের বাঁশকান্দি ইউনিয়নের শম্ভুক এলাকার মৃত আবু আলী খালাসীর ছেলে মিরজন খালাসী (৪৪) ও সদর উপজেলার ছিলারচর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর এলাকার রতন ব্যাপারীর ছেলে আছমত আলী ব্যাপারী ওরফে হাসমত (৪৪)।
এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন, পটুয়াখালীর লেবুখালী এলাকার মৃত ফকু হাওলাদারের ছেলে সাগর হাওলাদার (৪৬) ও মাদারীপুরের কালকিনির কাশিমপুর গ্রামের সৈয়দ আলী খাঁ’র ছেলে মোস্তফা খাঁ (৪৮)।
স্থানীয়ার জানান, সোমবার শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের সম্ভুক এলাকার ভ্যানচালক দেলোয়ার হাওলাদারের ঘরে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায় ডাকাত দল। এ সময় প্রতিবেশী হালিম ফকিরের বাড়ির ঘরের দরজা ভাঙার চেষ্টা করে পাঁচ-ছয়জন অস্ত্রধারী। এ সময় বাড়ির লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে ডাকাত বলে চিৎকার করে। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়। বাকিরা পালিয়ে গেলেও বাজিতপুর এলাকায় দুজনকে ধরে গণপিটুনি দেন স্থানীয়রা।
মিরজন খালাসী ও হাসমতকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক মিরজনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসমতকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে পথে তিনিও মারা যান।
শম্ভুক এলাকার গ্রাম পুলিশ রাজা মিয়া জানান, এলাকার লোকজন ধাওয়া দিয়ে দুজনকে পিটুনি দেন। এতে ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান। আরেকজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। মূলত উত্তেজিত জনতা এ ঘটনা ঘটায়।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, গণপিটুনির শিকার দুজনকে হাসপাতালে আনেন পুলিশ সদস্যরা। তাদের মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বাকি একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় জেলা সদর হাসপাতালে।
মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গণপিটুনির শিকার হাসমত ব্যাপারী নামে একজনকে পুলিশ হাসপাতালে আনে। তাকে পরীক্ষা করে দেখা যায়, হাসপাতালের আনার আগেই মারা গেছেন। এছাড়া এ ঘটনায় মারা যাওয়া আরেকজনসহ দুজনেরই মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
মাদারীপুরের শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বলেন, গণপিটুনিতে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনা তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাত সন্দেহে দুজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলে উত্তেজিত জনতা।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সবাইকে আইনের প্রতি আস্থা রাখতে হবে। দুই যুবক মারা যাওয়ার ঘটনায় দুটি মামলা হবে। একটি ডাকাতি, অন্যটি গণপিটুনিতে মৃত্যু।