বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে পড়ে পানি, এর মধ্যেই চলে পাঠদান

ফানাম নিউজ
  ১৫ অক্টোবর ২০২১, ১২:১০

নওগাঁর সদর উপজেলার জালম মাগুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মাণের পর পেরিয়ে গেছে ৩১ বছর। ভবনের পলেস্তারা খসে বেরিয়ে এসেছে রড। দেয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল। সেখানেই আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয়টি পাঠযোগ্য করতে দ্রুত সংস্কারসহ নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।

জানা গেছে, সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউনিয়নের জালম মাগুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে ঘটেছে পলেস্তারা খসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গায়ে পড়ার মতো ঘটনা। এছাড়া ভবনের ছাদ চুয়ে পড়ে পানি। বিম ও দেয়াগুলোতে দেখা দিয়েছে ফাটল। ভবনটি দুর্বল হওয়ার কারণে বৃষ্টি হলেই শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে চায় না। এর আগে বেশ কয়েকবার ভবনটি মেরামত করা হলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র রাব্বি হোসেন, ছাত্রী নাজমি খাতুন ও নাহিদা খাতুনের সঙ্গে কথা হলে তারা বলে, ‘আমাদের স্কুলটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মা-বাবা আমাদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পায়। স্কুলে আসতেও ভয় লাগে। স্কুলের ফ্যান চলার সময় মনে হয় যেন পুরো বিল্ডিং কাঁপে। বৃষ্টি হলে ছাদ বেয়ে পানি পড়ে। ছাদের পলেস্তারা অনেক সময় খসে গায়ে পড়ে। দেয়ালগুলো ফেটে আছে মনে হয় কখন যেন ভেঙে পড়বে। ঝড়-বৃষ্টি আসলে আমাদের খুব ভয় লাগে।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. জুলেখা বেগম জানান, বিদ্যালয়টিতে ছাত্র-ছাত্রী আছে ১৪১ জন। কয়েকবার স্কুলের ভবন মেরামত করা হয়েছে। তারপরও ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। বিদ্যালয়ের জানালা দরজাগুলো দুর্বল। বাচ্চাদের নিয়ে আতঙ্কের ভিতরে ক্লাস করতে হয়। অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, দিনে দিনে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। ভবনের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি। দ্রুত বিদ্যালয়টি সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

নওগাঁ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা জানান, জালম মাগুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির ভবন বেশ পুরোনো। সংস্কারের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে সাত লাখ টাকার একটি চাহিদা পাঠিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বরাদ্দ পাওয়ায় গেলে বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো দূর করা সম্ভব হবে। উপজেলা প্রকৌশলীর মতামতের প্রেক্ষিতে ছাদের উপরে জলছাদ ঢালাই এর মাধ্যমে বিদ্যালয়কে সুন্দর করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের প্রয়োজন হলে পুরোনো ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হবে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলতে বলবো। যদি সেখান থেকে এরকম কোনো নির্দেশনা আসে তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’ সূত্র: জাগো নিউজ