শিরোনাম
তিনদিন পরই অনুষ্ঠিত হবে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচন। শেষ সময়ে এসে ভোটারদের মন জয় করতে নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
এবারের বরিশাল সিটি করপোরশন নির্বাচনে সাতজন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া ৩০টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৯ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১০টি পদের বিপরীতে ৪২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে গণসংযোগ করতে দেখা গেছে প্রার্থীদের। দুপুর ১টায় নগরীর বাজার রোড এলাকায় গণসংযোগ করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। দুপুর ১২টায় নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ড নগর ভবন এলাকায় গণসংযোগ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর লাইন রোড ও কাটপট্টি এলাকায় গণসংযোগ করেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন। সকাল ৯টায় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রসুলপুর এলাকায় লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন এলাকায় কাউন্সিলর প্রার্থীদের বৃষ্টি উপেক্ষা করে গণসংযোগ করতে দেখা গেছে।
গণসংযোগকালে নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, ‘বরিশালে কখনো ব্যবসার পরিবেশ তৈরি করা হয়নি। অথচ ব্যবসা হচ্ছে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। আমি নির্বাচিত হলে বিগত দিনের এ ব্যর্থতা ঘোচানোর চেষ্টা করবো।’
তিনি বলেন, বরিশালে শিল্প এলাকা আছে কিন্তু শিল্প কারখানা নেই। অথচ সরকার ব্যবসার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। যার প্রমাণ দেশে এখন চারটি পোর্ট (নদীবন্দর) রয়েছে।
বরিশালের ব্যবসায়ীরা নানা প্রতিকূলতার শিকার হচ্ছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী বলেন, ‘নির্বাচিত হলে নগরীকে একটি ব্যবসাবান্ধব নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। নগরবাসীর সব ভোগান্তি নিরসনে কাজ করা হবে। সিটি করপোরেশন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।’
জাতীয় পার্টির প্রার্থী তাপস বলেন, ‘মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। তবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনো নিশ্চিত হয়নি। আওয়ামী লীগের যারা নেতাকর্মী রয়েছেন, তারা বিভিন্নভাবে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছেন। ছাত্রলীগের বিশেষ নেতারা এখানে এসে নৌকার লোগো লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘মনে হচ্ছে ধীরে ধীরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হওয়ার দিকেই যাচ্ছে। আমাদের কিছু লোককে হয়রানি করার খবর এসেছে। টুপি-দাড়ি দেখে আমাদের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে কোথায় বাড়ি, আসছেন কেন? অথচ নির্বাচন আচরণবিধির মধ্যে কোথাও লেখা নেই এই শহরের বাইরের কেউ ভোট চাইতে পারবে না, আসতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘বরিশালের নির্বাচনের দিকে গোটা দুনিয়া তাকিয়ে আছে। কাজেই নির্বাচন যদি কোনো অবস্থায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়, ক্লিন না হয় এবং গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আন্দোলনের অবস্থা ভিন্ন দিকে মোড় নেবে বলে মনে করি।’
বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত আহসান হাবিব কামালের ছেলে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন বলেন, ‘আমার বাবা সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করেছেন। সেই আদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমিও জনগণের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই।’
বরিশাল সিটি করপোরেশনে ৩০টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন ও নারী ভোটার এক লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন। আগামী ১২ জুন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।