শিরোনাম
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে চট্টগ্রাম বন্দরসহ কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে দুই নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগর থেকে শত শত লাইটার জাহাজ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য অবস্থান নিয়েছে কর্ণফুলী নদীতে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতুর উজানে কালুরঘাট সেতুর ভাটিতে শত শত লাইটার জাহাজ অবস্থান নিয়েছে। সাধারণত এসব লাইটার জাহাজ বঙ্গোপসাগরের মোহনায় থাকতো।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দুপুর ১২টার তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক হাজার ২৫৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত দুই নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত বহাল রয়েছে। সংকেত বাড়লে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত তিনে উঠলে আমরা সবগুলো দপ্তর ও স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে মিটিং করি। জাহাজগুলো নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এখনো ঘূর্ণিঝড় পর্যবেক্ষণ করছি আমরা।
এদিকে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস সন্ধ্যা ৬টার স্থানীয় পূর্বাভাসে জানিয়েছে, চট্টগ্রামের আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ প্রধানত আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বর্তমানে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৭ সেলসিয়াস বেশি।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চট্টগ্রামে পশ্চিম দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৮ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। এছাড়া পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে আবহাওয়া।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মেঘনাথ তঁঞ্চঙ্গা জাগো নিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে আপাতত দুই নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে ১২ মে সকাল পর্যন্ত উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।