শিরোনাম
অবুঝ দুই ভাই-বোন। ছেলেটির বয়স সাত বছর আর মেয়েটির পাঁচ। তাদের চোখের সামনে দিয়েই মা-বাবার লাশ ঘর থেকে বের করে মর্গে নিয়ে গেল পুলিশ। অথচ বিষয়টি বোধগম্য হচ্ছে না তাদের। তাই তো তারা বাড়ি ভর্তি শোকস্তব্ধ মানুষের মাঝেও দিব্যি খেলাধুলায় মেতে আছে।
বলছি নেত্রকোনার মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের বালালী গ্রামের সদ্য মা-বাবা হারানো শিশু অপূর্ব ও জ্যোতির কথা। তারা ঐ গ্রামের নান্দু মীর ও হিমা আক্তার দম্পতির সন্তান।
মঙ্গলবার সকালে বসত ঘরের মেঝে থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় হিমা আক্তারের এবং ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় নান্দু মীরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
তিয়শ্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখরুদ্দিন আহমেদ জানান, মা-বাবা হারা শিশু দুটি বর্তমানে তাদের মামা আব্দুল্লাহ আল মামুনের আশ্রয়ে রয়েছে। শিশুদের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় হচ্ছে তাদের মা-বাবা। কিন্তু বোঝার বয়স হওয়ার আগেই শিশু দুটি তাদের আশ্রয় হারাল। এটা খুব মর্মান্তিক।
অপূর্ব ও জ্যোতির মামা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অবুঝ শিশু দুটিকে মা-বাবা কোথায় জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়- ‘মা শুয়ে আছে, বাবা দাঁড়িয়ে আছে।’ অথচ দুজনই মৃত। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন এসে ভিড় জমায়। সবাই শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে। কিন্তু অপূর্ব ও জ্যোতি বুঝতেই পারেনি যে- তাদের মা-বাবা মারা গেছে। তারা বাড়ি জুড়ে ছুটোছুটি ও খেলাধুলা করছিল।
তিনি আরো জানান, অপূর্ব স্থানীয় একটি কিন্ডার গার্টেনে দ্বিতীয় শ্রেণিতে এবং জ্যোতি একই স্কুলে প্লে শ্রেণিতে পড়ে। অসহায় শিশু দুটির লালন-পালনের দায়িত্ব এখন থেকে আমার।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নান্দু মীরের সঙ্গে বিয়ের পর থেকেই নানা বিষয় নিয়ে হিমা আক্তারের কলহ লেগে থাকতো। দাম্পত্য নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
মদন থানার ওসি ফেরদৌস আলম জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পিবিআই ও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট আলামত সংগ্রহ করেছে।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সি জানান, সঠিক কোনো ক্লু এখনো পাওয়া যায়নি। তবে স্ত্রীকে শাবল দিয়ে আঘাত করে হত্যার পর স্বামী নিজে আত্মহত্যা করতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধরাণা করা হচ্ছে। সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ