শিরোনাম
‘দুই ভাই গেলাম সুন্দরবনে। সেখানে ভাইকে আক্রমণ করল বাঘ। আমার একটাই ভাই, তাই এমন দৃশ্য দেখে হাতের লাঠি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি। বাপের মতন বড় ভাইকে বাঘে নেযাচ্ছে দেখে শরীরে যেন অসুরের শক্তি ভর করল। ভাইকে হারানোর ভয়ে তখন নিজের জীবনের প্রতি কোনো মায়া ছিল না।’ কথাগুলো বলছিলেন, প্রাণপণ লড়ে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ থেকে ভাইকে বাঁচিয়ে আনা লিয়াকত হোসেন।
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কাছিকাটা দারগাং এলাকায় মঙ্গলবার বিকেলে বাঘের হামলার শিকার হন ওয়াজেদ আলী (৪৮)।
লিয়াকত বলেন, ‘নৌকায় আঁটল উঠানোর এক পর্যায়ে বাঘ পেছন থেকে ভাইকে হামলা করে। এ ঘটনায় প্রথমে ভয় পেয়ে যায়, তীব্র চিৎকার করতে থাকি। একমাত্র বড় ভাইকে বাঘে নিয়ে যাচ্ছে বিষয়টা মানতে না পেরে দ্রুতই লাঠি দিয়ে বাঘকে পাল্টা আক্রমণ করি। ভাইও বাঘের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। প্রায় দুই থেকে তিন মিনিট এ ভাবে লড়াইয়ের একপর্যায়ে ভাইসহ বাঘ নদীতে পড়ে যায়। তখন নৌকায় দাঁড়িয়ে বাঘকে বেশি বেশি আঘাত করতে থাকি। একপর্যায়ে বাঘ ভাইকে ছেড়ে চলে যায়।’
জানা যায়, গত চারদিন আগে পশ্চিম সুন্দরবনের কৈখালী স্টেশন অফিস থেকে পাশ (অনুমতি) নিয়ে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে যান ওয়াজেদ ও লিয়াকত। তারা শ্যামনগর উপজেলার ছোটভেটখালী গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে। বাঘের কবল থেকে উদ্ধারের পর আহত ভাইকে নিয়ে মঙ্গলবার সারারাত নৌকা বেয়ে বুধবার ভোরে লোকালয়ে ফেরেন লিয়াকত।
পরে শরীরে বাঘের দাঁতসহ নখের আঁচড়ে গুরুতর আহত ওয়াজেদ আলীকে রমজাননগরে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক ইকবাল হোসাইন চৌধুরী জানান, বাঘের আক্রমণে এক জেলের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের বনে প্রবেশের অনুমতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। পর বন আইনের আওতায় আহতের জন্য আর্থিক সুবিধার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।