শিরোনাম
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে বেড়েছে জ্বর সর্দি কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। যার মধ্যে অধিকাংশই শিশু। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। এতে বেড়েছে রোগীর চাপ। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়। অন্যদিকে বাধ্য হয়ে হাসপাতালের করিডোরে চলছে রোগীর চিকিৎসা। তবে আতঙ্কিত না হয়ে শিশু ও বয়স্কদের প্রতি অভিভাবকদের আরও যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, দিনে প্রচণ্ড গরম আর রাতে ঠাণ্ডা। আবহাওয়ার এমন পরিবর্তনে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে রোগীর সংখ্যা। তবে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। শুধু সরকারি হাসপাতালে নয়, প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতেও বেড়েছে এমন রোগীর সংখ্যা। জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে তারা।
এ বিষয়ে ভর্তি হওয়া কয়েকজন শিশুর অভিভাবকরা জানান, জ্বর সর্দি কাশি পাতলা পায়খানাসহ নানান ধরনের সমস্যা নিয়ে শিশুদেরকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। যার মধ্যে অনেকেই ৪ দিন ৫ দিন কেউবা ৬ দিন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে চিকিৎসা নিয়ে কারও কোনো আক্ষেপ না থাকলেও পর্যাপ্ত বেড না থাকায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তারা। দিনের বেলা প্রখর রোদ ও অতিরিক্ত রোগী ও স্বজনদের উপস্থিতিতে হাসপাতালের তাপমাত্রা অত্যাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি তাদের। তাই অতিরিক্ত গরমে হাসপাতালে অবস্থান করা কিছুটা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। অভিভাবকরা এ সময় শিশুদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে কোন প্রকার অসন্তুষ্টি প্রকাশ না করলেও টয়লেট ও পরিবেশ নিয়ে কিছুটা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
হাসপাতালের সিনিয়র নার্স শাহানারা বেগম বলেন, রোগীর চাপ বেশি হলেও সাধ্যমত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। পর্যাপ্ত বেড না থাকায় অনেকেই করিডোরে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে চিকিৎসায় কোন গাফিলতি হচ্ছে না। আমরা সকল রোগীকে হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিয়ে শিশুদেরকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছি।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. আসমা বেগম জানান, এ সময় শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে এবং আরও সাবধান হতে হবে মায়েদের।
তিনি বলেন, বর্তমানে জ্বর ঠাণ্ডা কাশি নিয়ে বেশিরভাগ শিশুই আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এটি মূলত সিজনাল ফ্লু। বিষয়টিতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এই সময় বাচ্চাদের একটু জ্বর জ্বর ভাব ঠাণ্ডা কাশিসহ বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। এক্ষেত্রে মায়েদের একটু সতর্ক থাকতে হবে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক একেএম মাহবুবুর রহমান জানান, গত কয়েকদিন হাসপাতালে রোগীর চাপ কিছুটা বেশি। যার মধ্যে অধিকাংশই আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। তবে পর্যাপ্ত বেড না থাকলেও রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। হাসপাতালে পর্যাপ্ত মেডিসিন মজুদ রয়েছে।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ৩১ বেডের বিপরীতে বর্তমানে ৮১ জন শিশু রোগী ভর্তি রয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময় বাচ্চাদের খাদ্যাভ্যাস যেন অনিয়ন্ত্রিত না হয়। বাবা-মায়ের সেইদিকে খেয়াল রাখার তাগিদ দেন চিকিৎসক। পাশাপাশি শিশু ও বয়স্কদের দিতে বাড়তি নজর রাখার পরামর্শ দেন তারা।
সূত্র: আরটিভি