শিরোনাম
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় বৃহস্পতিবারও (১৯ জানুয়ারি) সারাদিন থেমে থেমে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।কোনারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী দুই সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় গোলাগুলি অব্যাহত থাকায় আতঙ্কিত সাধারণ রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ছেড়ে আশপাশের এলাকায় আশ্রয় নিতে চেষ্টা করছেন।
এরই মধ্যে কয়েক শতাধিক রোহিঙ্গা তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর কোনারপাড়া খোলা বিলে তাঁবু টানিয়ে অবস্থান করছেন। কিছু চলে গেছেন মিয়ানমারের কাঁটাতারের ভেতরে। পোড়া ঘরের বাসিন্দারা হতবিহ্বল হয়ে যে যারমতো আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তীব্র শীতে ঘরহারা মানুষগুলো শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। সবমিলিয়ে সেখানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এমনটিই জানিয়েছেন শূন্যরেখায় অবস্থানরত ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ।
এদিকে, শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চলমান ঘটনার পর বাড়তি সতর্কতায় তুমব্রু ও ঘুমধুমের প্রধান ও উপসড়কে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিজিবি-পুলিশ। নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে যান চলাচল। স্থানীয়রা ছাড়া বাইরের কেউ চাইলেই এলাকায় ঢুকতে পারেননি বৃহস্পতিবার সারাদিন।
সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স বাড়িয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি, ঘুমধুম-তুমব্রুর বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একে জাহাঙ্গীর আজিজ।
ঘুমধুম কোনাপাড়া ক্যাম্পের হাবিবা বেগম (৪৫) নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, ‘বুধবার (১৮ জানুয়ারি) থেকে আরসা ও আরএসও গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই মিয়ানমারে ঢুকে পড়েছেন। অনেকে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। শূন্যরেখায় সংঘাতের পর দেওয়া আগুনে রোহিঙ্গাদের এক-তৃতীয়াংশ ঘর পুড়ে গেছে। প্রাণ বাঁচাতে সবাই দিগ্বিদিক পালিয়েছেন। আমার তিন সন্তান কোথায় আছে বৃহস্পতিবার সারাদিনই খবর পাইনি।’
তুমব্রু বাজার এলাকার বাসিন্দা তরকারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হোসেন (৫০) বলেন, ‘ঘুমধুম কোনাপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বুধবার সকাল থেকে গোলাগুলির শব্দে স্থানীয়দেরও নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হয়েছে। দফায় দফায় রোহিঙ্গাদের গোলাগুলি বৃহস্পতিবারও অব্যাহত ছিল। কোনাপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যে আগুন জ্বলেছে তাতে বোঝা যায় অনেক ঘর পুড়ে গেছে। খবর পেয়েছি আশ্রয়হীন হয়ে শত শত রোহিঙ্গা মিয়ানমারের ভেতরে ঢুকে গেছেন।’
স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গোলাগুলির ঘটনায় তুমব্রু বাজারের অনেকেই দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন। আগের চেয়ে বিজিবি ও পুলিশের টহল বেড়েছে। তুমব্রু বাজারসহ ঘুমধুম এলাকায় অকারণে স্থানীয়রাও চলাচল করতে পারছেন না।’