শিরোনাম
চট্টগ্রামে মারজান হক বর্ষা নামে সাত বছর বয়সী এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। যে বস্তা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয় সেটি ছিল প্লাস্টিকের (টিসিবি) খালি বস্তা। সেই বস্তার সূত্র ধরেই খুনিকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দিনগত রাত দেড়টার দিকে চট্টগ্রামের জামালখান এলাকার শ্যামল স্টোর (মুদিদোকান) থেকে খুনি লক্ষ্মণ দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। লক্ষ্মণ দাস চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার উত্তর পদুয়া গ্রামের মনি মিস্ত্রি বাড়ির ফেলোরাম দাসের ছেলে।
পুলিশ জানায়, শিশু বর্ষার মরদেহ যে প্লাস্টিকের বস্তায় করে ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, সেটি ছিল টিসিবির খালি বস্তা। ওই বস্তার সূত্র ধরেই খুনিকে চিহ্নিত করা হয়। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার পর প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে ড্রেনে ফেলে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে আসামি।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জামালখান এলাকার সিকদার হোটেলের পেছনের নালা থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত বর্ষার মা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বর্ষা কুসুমকুমারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তাদের বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে হলেও জামালখান এলাকার ভাড়াবাসায় থাকতো।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে-গত ২৪ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় বর্ষা। এ ঘটনায় বর্ষার বড় বোন কোতোয়ালি থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর জানান, ভুক্তভোগীর মরদেহ যে প্লাস্টিকের বস্তায় ছিল সেটিতে টিসিবির সিলযুক্ত। সেই বস্তাকে টার্গেট করেই তদন্ত শুরু হয়। সেই অনুযায়ী টিসিবির সিলযুক্ত বস্তার দোকান ও আশপাশের রেস্তোরাঁর গোডাউনে তল্লাশি করা হয়। একপর্যায়ে শ্যামল স্টোরের গোডাউনে তল্লাশি করে টিসিবির সিলযুক্ত একটি খালি বস্তা পাওয়া যায়। এরপর সেখানের আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয় এবং সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনায় লক্ষ্মণ দাসকে শনাক্ত করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার দিনগত রাত দেড়টায় ওই গোডাউন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী বর্ষা দোকানে কিছু কিনতে এলে লক্ষ্মণ বিভিন্ন সময়ে চিপস, চকলেট দিতো। ঘটনার দিন ২৪ অক্টোবর সে ভুক্তভোগীকে একশ টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে দোকানের পেছনে গোডাউনে নিয়ে যায়। সেখানে সে ভুক্তভোগীকে মুখ এবং নাক চেপে ধরে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে ভয়ে শ্বাসরোধে ওই শিশুকে হত্যা করেন। পরে গোডাউনে রাখা টিসিবির প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে মরদেহ পাশের ড্রেনে ফেলে দেয়।