মুরাদনগরে ভারতীয় নাগরিককে জন্মনিবন্ধন!

ফানাম নিউজ
  ০৭ অক্টোবর ২০২২, ১৩:০৮

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় এক ভারতীয় নাগরিককে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মসনদ, ওয়ারিশ সনদ ও নাগরিক সনদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলাউদ্দিন ভূঁইয়া জনির কাছে এমন একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল হওয়ার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে উপজেলাজুড়ে এক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে।

মুুরাদনগর ইউনিয়নর পরিষদ কি করে একজন ভারতীয় নাগরিককে জন্মসনদ, ওয়ারিশ সনদ ও নাগরিক সনদ প্রদান করলেন, তা কারো বোধগম্য নয়! এলাকাবাসীর অনেকে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কাকরাবন গোমতী থানার রাজধরনগরে ১৯৬১ সালে জানুয়ারী মাসের ২ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন হারাদন চন্দ্র দাস। ভারতে জন্মগ্রহণ ও ভারতীয় নাগরিকপ্রাপ্ত যার ভারতীয় পাসপোর্ট নম্বর আর-৭৫৮৯৫০৩ ও ভারতের পিন নম্বর ৭৯৯০১৩। ভারতীয় নাগরিক হওয়া সত্যেও মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের করিমপুর গ্রামের বাসিন্দা দেখিয়ে মুরাদনগর উপজেলার ১৩নং মুরাদনগর ইউয়িন পরিষদের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার মাধ্যমে জালিয়াতি করে একটি ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন সনদ, একটি নাগরিকত্ব সনদ ও একটি ওয়ারিশ সনদ গ্রহণ করে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

এমন অভিযোগ এনে গত ১৩ সেপ্টেম্বর উপজেলার করিমপুর গ্রামের দাস বাড়ীর মৃত গয়াচরন দাসের ছেলে মাখন চন্দ্র দাস মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. কবির আহামেদকে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কোনো ব্যক্তির জন্মসনদ থাকলে তার জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলেও যেহেতু বাংলাদেশে পাসপোর্ট তৈরি করা যায় তাই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে মানবপাচারকারীরা। ভারতীয় নাগরিকদের ভুয়া সনদ তৈরি করে মোটা অংকের টাকা উপার্জনে জড়িত থাকতে পারে ওই ইউনিয়ন পরিষদের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা।

এ বিষয়ের তদন্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. কবির আহামেদ বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মুরাদনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। যেহেতু এটা একটা টেকনিক্যাল বিষয় সেহেতু তদন্তের গভীর পর্যন্ত যেতে কিছু সময় লাগবে।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূইয়া জনী বলেন, আমরা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। সে অনুযায়ী তদন্তের কাজ চলছে। বিষয়টি রাষ্ট্রীয় ব্যাপার তাই আগে তদন্ত হোক পরে সবকিছু জানানো হবে।

তিনি আরো বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র যেন না করতে পারে সে জন্য উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হবে।