শিরোনাম
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) প্রশাসনিক ভবনে যততত্র ফাটল ধরা পড়েছে। এমন অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে প্রশাসনিক ও পাঠদান কার্যক্রম। ভবনের বিভিন্ন অংশে ইট ও পলেস্তারা খসে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থিত পাঁচতলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরা পড়েছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফাটলে ছেয়ে গেছে পুরো ভবনের অধিকাংশ স্থান। এরমধ্যে ভবনের দিতীয় ও চতুর্থ তলায় ফাটলের ফলে ভেতর থেকে রড বেড়িয়ে এসেছে। সিমেন্ট,পাথর ও ইটের টুকরো প্রতিনিয়ত খসে পড়ছে। ফলে যখন তখন ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ভবনের নিচ দিয়ে প্রতিদিন অনিরাপদভাবে যাতায়াত করছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের প্রায় ৭৫০ জন শিক্ষার্থী শিডিউল অনুযায়ী প্রশাসনিক ভবনে ক্লাস করে থাকেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে এই ভবন থেকেই। যার ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রায় পাঁচশ কর্মকর্তা-কর্মচারী এ ভবনে প্রতিদিন অবস্থান করে করে তাদের কাজ পরিচালনা করেন।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আক্তারুজ্জামান সবুজ বলেন, যেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অবস্থান করেন, আর সেই ভবনের এমন অবস্থা সত্যিকার অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাজনক। শ্রেণিকক্ষের সংকট থাকায় আমাদের অনেক ডিপার্টমেন্টের ক্লাস করতে হয় এই প্রশাসনিক ভবনে। কিন্তু ভবনের এমন জরাজীর্ণ অবস্থা আমাদেরকে শঙ্কিত করে তুলেছে। ইতোমধ্যে এই ভবনে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডে শিক্ষার্থীরা এমনিতেই শঙ্কার মধ্যে দিন কাটায় কখন কী হয়ে যায়। আর ভবনের এই ফাটল আমাদের মনে তৈরি করেছে এক নতুন শঙ্কা। আমরা এ শঙ্কা থেকে মুক্তি চাই।
প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল কাদির উষাণ বলেন, প্রশাসনিক ভবনের অবস্থা খুবই বেহাল। ভবনের নিচে দিয়ে চলাচল করতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সর্বদা আতঙ্কিত থাকে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভবনে ফাটল ধরে আস্তরণ খসে পড়ছে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা সব সময় ভয় নিয়ে চলাচল করে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে এটি সমাধানের জোড় দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।
সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফেরদৌস ইকবাল বলেন, প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় ও চতুর্থ তলায় ফাটল ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফলে অনেক ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে আমাদের। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকায় জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। আশা করি এই সমস্যা অতি দ্রুত সমাধান হবে। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ বিষয়ে উন্নয়ন ও পরিকল্পনা পরিচালক প্রকৌশলী জামাল হোসাইন বলেন, ফাটলটি আমরা দেখিনি, আপনার মাধ্যমে এখনই জানলাম। আমরা দ্রুতই এর সমাধান করে দেব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, এ বিষয়টি খুবই গুরুতর। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরকে জানাচ্ছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.আব্দুল বাকি বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো মতামত দিতে পারছি না। তবে এটি দ্রুত সমাধান করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরকে জানাব।