শিরোনাম
রাজশাহীতে যাত্রীদের জিম্মি করে ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে অটোরিকশা বন্ধ রেখে আন্দোলন করে চালকরা। দুই দিন ধরে তাদের এমন নৈরাজ্যের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি ‘দূর করতে’ শুরু হয়েছে সিটি সার্ভিস বাস চলাচল।
তবে বাস চালুর পর বিকাল থেকে অটোরিকশাও চলাচল করতে দেখা গেছে শহরে। আন্দোলন প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও দিয়েছে অটোরিকশা চালকদের পক্ষ থেকে।
জানা গেছে, রাজশাহীতে অটোরিকশার চালক ও মালিকদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে দুটি সংগঠন। তাদের মধ্যস্থতায় গত বছরের জানুয়ারিতে অটোরিকশার ভাড়া বাড়ানো হয়। এখন আবার ভাড়া বাড়ানোর জন্য রোববার থেকে চালকদের আন্দোলন শুরু হয়েছে। সে বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানতো না চালক-মালিকদের সংগঠন দুটি।
রোববার চালকেরা নগর ভবন ঘেরাও করতে এসে দাবি করেন, তাদের কোনো ‘নেতা’ নেই। নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে তারা নিজেরাই ভাড়া বৃদ্ধির দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অটোরিকশা চালকদের নতুন একটি সংগঠনের তথ্য যায়। ‘ইজিবাইক শ্রমিক চালক সমিতি’ নামের এই সংগঠনের একটি কমিটির তালিকাও পাওয়া গেছে। ২২ সদস্যের এই কমিটিতে উপদেষ্টা হিসেবে এক নম্বরে রয়েছে রাসিকেরই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনারের নাম ও মোবাইল নম্বর। এছাড়া সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ পূর্ণাঙ্গ কমিটির সবার নাম ও মোবাইল নম্বর এতে আছে।
তবে এ কমিটির বিষয়টি প্রকাশ পেয়ে যাওয়ায় এখন কেউ ফোন ধরছেন না। এই কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে নাম থাকার বিষয়ে কথা বলতে কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেনকে তিনবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক ও এক সদস্যকে ফোন করা হলেও ধরেননি। তবে সাংগঠনিক সম্পাদকের পাশে লেখা মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে ফোনটি রিসিভ করে বলা হয় ‘রং নাম্বার’।
রোববার চালকরা প্রায় দুই ঘণ্টা ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরদিন সোমবারও প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করেন তারা। তবে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নগর ভবনের বাইরে থাকায় দুই দিনই তারা দুপুরের দিকে ফিরে যান। সোমবার শহরে বাস চলাচল শুরু হওয়ার পর বিকাল থেকে অটোরিকশাও চলতে দেখা যায়।
রাজশাহী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেন, অটোরিকশা বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েছেন। তাদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করেই শহরে ৩০টির মতো বাস নামানো হয়েছে। তবে এটা সাময়িক সিদ্ধান্ত। অটোরিকশা যদি আবার আসে তাহলে তো বাস চালানোর জায়গা পাওয়া যাবে না।
সিটি সার্ভিসের বিষয়ে জানতে চাইলে রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ইজিবাইক নিয়ন্ত্রক কমিটির আহবায়ক সরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, অটোরিকশা চালকেরা যেভাবে আন্দোলন শুরু করে তা একেবারেই নিয়মতান্ত্রিক না। হুট করেই তারা অটো বন্ধ করে মানুষকে জিম্মি করে ফেলেছে। সুযোগ পেলেই তারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে সুন্দর শহর রাজশাহীর ভাবমূর্তি নষ্ট করে। কিন্তু আমাদের মেয়র পরিবেশবান্ধব এবং অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করে অটোরিকশা দিয়েছিলেন। তাই সিটি সার্ভিসের বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করছি না। সবকিছু আসলে মঙ্গলবারের সভার পরেই বলা যাবে।