মিরসরাইয়ে ৩০ কিমিতে অর্ধশত অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং, ঘটছে দুর্ঘটনা

ফানাম নিউজ
  ৩০ জুলাই ২০২২, ০৭:৫৬
আপডেট  : ৩০ জুলাই ২০২২, ০৯:২৯

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অর্ধশত লেভেল ক্রসিং রয়েছে। গেটম্যানের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এসব ক্রসিংয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। অকালে ঝরছে তাজা প্রাণ।

সবশেষ খৈয়াছরা ঝরনা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষে ১১ জনের প্রাণহানি ঘটে। এই লেভেল ক্রসিংয়ে আগেও বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। বারইয়ারহাট লেভেল ক্রসিংয়েও ঘটছে দুর্ঘটনা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে বারইয়ারহাট লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছে প্রায় ২০ জন পথচারী। এ ক্রসিং পার হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাসা, ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস, অটোরিকশাসহ নানা ধরনের যানবাহন চলাচল করে। ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর ওই ক্রসিংয়ে একটি বালুবোঝাই ট্রাক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তখনো দায়িত্বে অবহেলা অভিযোগ ওঠে তৎকালীন গেটম্যান সাবের হোসেনের বিরুদ্ধে।

একই বছরের ৩১ জুলাই গেটবার না ফেলায় বিজয় এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেনের সঙ্গে বাসের ধাক্কা লেগে অন্তত ২০ বাসযাত্রী আহত হন। ঘটনার পর গেটম্যান পালিয়ে যান।

২৪ জুলাই গেটবার না ফেলায় একটি মিনি পিকআপের সঙ্গে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেন সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের ধাক্কা লাগে। তখন গেটম্যান পাশে দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন।

জানা গেছে, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের অধীন মিরসরাইয়ের ধুমঘাট রেলসেতু থেকে দক্ষিণের বারইয়াঢালা পর্যন্ত গড়ে উঠেছে অন্তত ৫০টি অবৈধ লেভেল ক্রসিং। চোরাই কাঠ ও পণ্য পরিবহনের স্বার্থে এসব ক্রসিং তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। এসব ক্রসিং বন্ধে বিভিন্ন সময়ে রেলওয়ে কিছু পদক্ষেপ নিলেও তা কার্যকর হয়নি।

মিরসরাইয়ের চিনকির আস্তানা রেলস্টেশনের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মিরসরাইয়ের ৩০ কিলোমিটার রুটে অনুমোদিত লেভেল ক্রসিং মাত্র সাতটি। এর বাইরে মানুষের তৈরি ক্রসিং তৈরি হয়েছে অনেক। এগুলো বন্ধে বারবার কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিলেও প্রভাবশালীদের কারণে কার্যকর হয় না।’

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈধ লেভেল ক্রসিংগুলোর মধ্যে বারইয়ারহাট, বিএসআরএম গেট, মহামায়া, খৈয়াছরা ছাড়া বাকি চারটিতে কখনো গেটম্যান থাকে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের একটি স্টেশনের একজন স্টেশন কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন সময়ে চোরাচালান প্রতিরোধে অবৈধ ক্রসিংগুলো লোহার খুঁটি দিয়ে ঘিরে রাখলেও রাতের আঁধারে ফেলে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার শামছুদ্দোহা বলেন, ‘খৈয়াছরা ঝরনার রাস্তার মুখে যে লেভেল ক্রসিং রয়েছে, মানে আজ যেখানে দুর্ঘটনা ঘটে ওইখানকার গেটম্যানের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। এটি আমাদের আওতায় নেই।’

সূত্র: জাগো নিউজ