কোরবানিতে নজর কারছে গোপালগঞ্জের টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়

ফানাম নিউজ
  ০২ জুলাই ২০২২, ১১:২২

শখ করে চারটি ষাঁড়ের নাম রাখা হয়েছে টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়। প্রতিটির ওজন প্রায় ত্রিশ মণের কাছাকাছি ও দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। তিন বছর আগে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হোগলাকান্দির কাশিয়ানী এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের মালিক গিয়াস উদ্দিনের খামারে জন্ম নেয় হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান জাতের এ চারটি ষাঁড়। 

পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে অনেকেই ষাঁড় চারটি কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। চারটা ষাঁড় দেখতে যেন চার পাহাড়, কোন প্রকার ওষুধ ছাড়াই তিন বছর ধরে মোটা তাজাকরণে প্রাকৃতিক ঘাস, কুঁড়া, ভুসি ও ভুট্টা খাওয়ানো হয়েছে। গিয়াস উদ্দিনের চার ষাঁড়ের মধ্যে টাইগার ও দুরন্তের দাম হাঁকছেন আট লাখ, আর রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়ের দাম সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। এরই মধ্যে রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়ের জন্য ক্রেতা সাড়ে চার লাখ টাকা দাম হাকালেও বিক্রি করেননি খামারের মালিক।

গিয়াস উদ্দিন ২০১৮ সালে চারটি গরু ও ৬-৭ জন কর্মচারী নিয়ে খামারটি গড়ে তুলেছেন। বর্তমানে খামারটিতে ৯০ এর অধিক গরু রয়েছে যার মধ্যে দুধের গাভির সংখ্যা ৫৫টি। প্রতিবছর কোরবানি উপলক্ষে ষাঁড় পালন করেন এ খামারি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল ষাঁড় চারটি দেখতে খামারে স্থানীয় ও বিভিন্ন উপজেলার  লোকজন ভিড় করেছে।

খামারের সামনেই সব ষাঁড় বেঁধে রাখা হয়েছে। তবে সবার নজর টাইগার ও রাজাবাবুর দিকে।

উপজেলার হোগলাকান্দির বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলিন উদ্দিন বলেন, আমার বয়স ৭৫ বছর বয়স। আমার জীবনে কোরবানির জন্য এত বড় গরু আমি দেখিনি। প্রতিদিন বহু মানুষ এই গরুগুলো দেখতে আসে। এই খামার আমার বাড়ির পাশেই, এমন কোনদিন নাই আমি আসি না। এদের দেখলে ভালো লাগে, মনের থেকে দুশ্চিন্তা চলে যায়। দেশীয় খাবার দিয়ে এরা গরুগুলো বড় করেছে। এতে দেশের উন্নতি ও যে পালন করেছে সেও আর্থিক স্বাবলম্বী হতে পারবে।

খামার মালিক গিয়াস উদ্দিন বলেন, তিন বছর পালনের পর টাইগার ও দুরন্তের ওজন হয়েছে প্রায় ত্রিশ মণ। অন্যদিকে রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়ের ওজন পঁচিশ মণেরও বেশি।

আরও জানান, গোপালগঞ্জে এত বড় ষাঁড় দেখে খুশি অনেকে। স্মৃতি হিসেবে রেখে দিতে ষাঁড়গুলোর সঙ্গে ছবিও তুলছেন অনেকে। সঠিক দাম পেলে এই কোরবানিতেই বিক্রি হবে টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়। এই খামারে চারটি ষাঁড়কে তিন বছর ধরেই তদারকি করছেন একজন ব্র্যাককর্মী।

কাশিয়ানী উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মানবেন্দ্র মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ষাঁড়ের জাত যদি ঠিক থাকে তাহলে হৃষ্টপুষ্ট করতে কোন প্রকার কৃত্রিম ‍উপকরণের প্রয়োজন হয় না। নিষিদ্ধ জিনিসগুলো ব্যবহার করলে ষাঁড় মারা যায়। যারা ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে গরু আনে তারাই এই নিষিদ্ধ ওষুধ ব্যবহার করে ষাঁড় মোটা-তাজা করে থাকে। 

হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান জাতের চারটি ষাঁড় ওষুধ ছাড়াই পালিত হয়েছে। এ ধরনের উন্নত জাতের গবাদি পশুকে প্রাকৃতিক ঘাস, খড়, কুঁড়া, ভুসি খাইয়ে লালনপালন করে বড় করলে ভোক্তারাও উপকৃত হবেন। কারণ রাসায়নিক খাবার মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।

সূত্র: দেশ রূপান্তর