শিরোনাম
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়ার মাত্র ৮০মিটার ড্রেনের কাজ সম্পন্ন না করতে পারায় এই অঞ্চলে জলাবদ্ধতা বেড়ে গেছে এবং তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে এই এলাকার জনগণের দুর্ভোগ এখন চরম পর্যায়ে। জনগণের ভোগান্তি দূর করতে প্রয়োজনে আমি নিজে আদালতে যাব। জনগণের ভোগান্তির বিষয়টি মহামান্য আদালতে উপস্থাপন করে এর দ্রুত সমাধানে ব্যবস্থা নেব।
শুক্রবার (১০ জুন) সকালে রাজধানীর কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া এলাকায় ওয়াসা থেকে পাওয়া ড্রেনেজ অংশ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়ার এই ড্রেনেজ অংশ ওয়াসা হতে ডিএনসিসির কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং ড্রেনেজের কাজ ওয়াসা বন্ধ করে দেয়। পরে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে ড্রেনের কাজ শুরু হয়। ডিএনসিসি কাজ শুরু করলে আগে ওয়াসা থেকে পাওয়া কাজটির ঠিকাদার মামলা দায়ের করলে আদালত সেখানে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। এতে ওই অংশে ডিএনসিসির ড্রেনের উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
মেয়র বলেন, আমি আজকে এখানে এসে দেখলাম পূর্বে যারা কাজ করে গেছেন, তারা ড্রেনের ভেতরে তাদের ব্যবহৃত পাইপ, সেন্টারিং এর জিনিসপত্র, বালির বস্তা, কাঠসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ফেলে রেখে চলে গেছেন। এগুলোও তারা পরিষ্কার করেনি। এর ফলে ড্রেনগুলোতে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সম্মিলিতভাবে কাজ করে এই ড্রেনগুলো পরিষ্কার করছে।
তিনি বলেন, জনগণের দুর্ভোগ দূর করতে আমি এখানে চারবার এসেছি। আমি এর আগেও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এবং ওয়াসার সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়ার এই অংশের সমস্যা সমাধানে গুরুত্বসহকারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই এলাকাসহ ডিএনসিসির অন্যান্য এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা একটি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করেছি। যেকোনো স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে কুইক রেসপন্স টিম তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ সেখানে উপস্থিত হয়ে দ্রুত পানি অপসারণ করে জলাবদ্ধতা নিরসন করবে। ১৬১০৬-এই হটলাইন নম্বরে যেকোনো অপারেটর (গ্রামীণ ফোন ব্যতীত) থেকে ফোন করে জলাবদ্ধতার বিষয়ে তথ্য জানানো যাবে।
কতদিনের মধ্যে এই ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হবে সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন ডিএনসিসি এখানে কাজের সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ইতোমধ্যে পাইপ ও অন্যান্য সরঞ্জাম চলে এসেছে। অর্থের বরাদ্দও দেওয়া আছে। মহামান্য আদালতের স্থগিতাদেশ উঠে গেলে আমরা মাত্র চার দিনে এই কাজটুকু সম্পন্ন করতে পারব।
মেয়র আরও বলেন, তালতলা থেকে মিরপুর ১০ পর্যন্ত পুরো সাড়ে চার কিলোমিটার ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে মাঝখানে কাজীপাড়ার শুধু এই অংশের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এই এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আমি আশা করি মহামান্য আদালত জনগণের দুর্ভোগ লাগবে দ্রুতই এটির একটি সুষ্ঠু সমাধান দিবেন।
এ সময় নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা এবং কুইক রেসপন্স টিম যেখন জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন পরিষ্কার করছে, সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণ পলিথিন, প্লাস্টিক বর্জ্য ও অন্যান্য নানা ধরনের বর্জ্য পাচ্ছে। আমি নগরবাসীকে অনুরোধ করছি আপনারা এই ধরনের বর্জ্য ড্রেনে ফেলবেন না।
পরে মেয়র আতিকুল ইসলাম মিরপুরের ৬০ ফিট রোডে বারেক মোল্লার মোড় নামক স্থানে একটি সরু রাস্তা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে সরু রাস্তাটি প্রশস্তকরণের উদ্দেশে রাস্তার পাশের জমির মালিকের সঙ্গে তার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেন। এ সময় তিনি জমির মালিককে অনুরোধ করেন নগরবাসীর চলাচলের সুবিধার জন্য রাস্তা প্রশস্তকরণে প্রয়োজনীয় জমি যেন ছেড়ে দেন এবং জমির মালিককে আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইসমাইল মোল্লা ও ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হুমায়ুন রশীদ (জনি), প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম এবং ডিএনসিসির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
সূত্র: আরটিভি