শিরোনাম
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযান হতে পারে এমন খবরে সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের মাকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে রেখে বাইরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যরা।
সম্প্রতি শিমরাইল এলাকায় পদ্মা জেনারেল হাসপাতাল নামে একটি ক্লিনিকে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল শাখা) মাহমুদুর রহমান ও তার সহকর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই প্রসূতিকে উদ্ধার করেন। তার পর তাকে মাতুয়াইলের শিশু-মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে মা ও নবজাতক ভালো আছে।
অ্যানেস্থেসিয়ার চিকিৎসক মাহমুদুর রহমান সন্ধ্যা ৬টার দিকে জানান, অবৈধ ক্লিনিক ও হাসপাতাল বন্ধের চলমান অভিযানে তিনি শনিরআখড়ায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখন তার কাছে খবর আসে, পদ্মা জেনারেল হাসপাতাল নামের ওই ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে মাকে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে চিকিৎসকসহ সবাই পালিয়েছেন। তার পর ক্লিনিকটি খুঁজে পেতে বেশ সময় লাগে। তারা যখন সেখানে পৌঁছান, তখন তালা খোলা পান। ভেতরে গিয়ে মাকে পান।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আমরা চাচ্ছিলাম, মা ও সন্তানের যাতে ক্ষতি না হয়। আমি নিজে চিকিৎসক, তাই পৌঁছার পর মায়ের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করি। তখন তিনি ভালো ছিলেন। অস্ত্রোপচারের পর সেলাই দেওয়া হয়েছে। পোস্ট-অপারেটিভ কক্ষে না পাঠিয়ে টেবিলে ফেলেই সবাই পালিয়ে গেছেন। তখন থেকে ভাবছি, চিকিৎসকেরা কীভাবে পারলেন এভাবে অস্ত্রোপচারের রোগীকে ফেলে চলে যেতে? আমি তো ঘটনাটা বিশ্বাসই করতে পারছি না। অস্ত্রোপচারপরবর্তী যে কোনো জটিলতায় মায়ের মৃত্যু হতে পারত।
পরে মা ও নবজাতককে মাতুয়াইলের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা।
ওই নারীর স্বজনরা বলেন, তারা জানেন না কোন চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করেছেন। অস্ত্রোপচারের আগেই তারা ক্লিনিকে ১০ হাজার টাকা জমা করেছিলেন।
মা ও নবজাতককে উদ্ধার অভিযানে ছিলেন ঢাকার সিভিল সার্জন আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান। তিনি জানান, হাসপাতাল বন্ধ, সংস্কারের কাজ চলছে এমন কথা লেখা ছিল ক্লিনিকটির গেটে। এ লেখার মূল উদ্দেশ্য ছিল— অবৈধ ক্লিনিক বন্ধের অভিযানে যাওয়া কর্মকর্তাদের বোকা বানানো।
তিনি জানান, এটি নিবন্ধিত কোনো ক্লিনিক নয়। এমনকি তারা কখনো অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে, তারও প্রমাণ নেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুর রহমান বলেন, এই মা ও নবজাতক ছাড়াও এই ক্লিনিকে গতকাল অস্ত্রোপচার করা তিনজন মা ছিলেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ দিয়ে ওই ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুর রহমান জানান।
সূত্র: যুগান্তর