শিরোনাম
সয়াবিনের রাজধানী লক্ষ্মীপুরে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে এবার। এতে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার সয়াবিন উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মৌসুমে ফসলটির ভালো ফলন হয়েছে।
ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। আরো ১৫ দিন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তারা কষ্টের ফসল পুরোপুরি ঘরে তুলতে পারবেন। দেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ৬৫ শতাংশ সয়াবিন এ জেলায় উৎপাদিত হয়।
এ বছর সয়াবিনকে ঘিরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার লেনদেনের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে এ মৌসুমে চরাঞ্চল ও গ্রামীণ অর্থনীতি বেশ চাঙ্গা থাকে। দাম হিসেবে স্থানীয় বাজারে প্রতি মণ সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার ৪০০ টাকা দরে।
এদিকে রায়পুর, কমলনগর ও সদরের নিম্নাঞ্চল, উপকূলীয় কিছু ক্ষেতে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি জমে সয়াবিনগাছে পচন ধরেছে। এর আগে বীজ বপন করলে অসময়ের অতিবৃষ্টির কারণে সয়াবিনের চারা গজায়নি। পরে কৃষকরা নতুন স্বপ্নে আবার বীজ বপন করেছিলেন।
জেলা কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে জেলা সদর, রায়পুর, কমলনগর ও রামগতিতে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১.৯ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ হিসাবে ৭২ হাজার ২০০ মেট্রিক টন সয়াবিন উৎপাদন হওয়ার কথা। এতে প্রায় সাড়ে ১৯ লাখ মণ সয়াবিন হবে। প্রতি মণ সয়াবিন গড়ে দুই হাজার টাকা হিসাবে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার লেনদেন হবে। বড় বড় কম্পানি এসব সয়াবিন পাইকারদের কাছ থেকে কিনে নেয়। ভোজ্য তেল থেকে শুরু করে অনেক খাদ্যদ্রব্য তৈরি হয় সয়াবিন দিয়ে।
কমলনগর ও রায়পুর উপজেলার ছয়জন প্রান্তিক চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আশানুরূপ ফলন হওয়ায় তারা ধারদেনা পরিশোধ করতে পারবেন। গত কয়েক বছর সয়াবিন চাষে তাদের লোকসান হয়েছে। দাম ভালো থাকায় এবার পুরনো ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
জেলার সবচেয়ে বড় সয়াবিনের বাজার রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জে। ওই বাজারের সয়াবিন ব্যবসায়ী সাইজ উদ্দিন মোল্লা বলেন, গত কয়েক বছর থেকে এবার অত্যধিক ভালো ফলন হয়েছে। এখন শুকনা সয়াবিন প্রতি মণ দুই হাজার ৩০০ থেকে দুই হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আধাকাঁচা সয়াবিনের দাম এক হাজার ৮০০ টাকা থেকে শুরু।
উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) আবু সালেহ মো. মিন্টু ফরায়েজী বলেন, এবার বেশ ভালো ফলন হয়েছে। যদিও বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি, গাছ নুয়ে পড়া ও কাদামাটি লেগে ফসলের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। চাষিরা বাজারে দামও ভালো পাচ্ছেন।
কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ বলেন, কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতায় ক্ষেতে পানি জমে সয়াবিন নষ্ট হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কৃষকরা ফসল পুরোপুরি ঘরে তুলতে পারবেন।