শিরোনাম
সংবাদ কর্মীদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহবান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন।
বুধবার বেলা ১১ টায় বরগুনা সার্কিট হাউস হল রুমে লিখিত বক্তব্য রাখেন তিনি। এমপি বলেন, সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমাকে নিয়ে অসত্য সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ করে আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও মানসম্মান ক্ষুণ্ণ করেছে। আমি যা করিনি তা লেখা হয়েছে।
২২ সেপ্টেম্বরের একটি ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, আমি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পাথরঘাটা ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত ফুটবল খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদানের জন্য মোটরসাইকেলে সেখানে রওনা দেই। ঘাটশ্রমিক নজরুল ইসলাম একটি মাইক্রোবাসে আমার সামনে সামনে যাচ্ছিল। আমার লোকজন সাইড দিতে বলার পরও আমার গাড়িতে সাইড দিচ্ছেন না তিনি। তারপরও আমি কিছু বলিনি।
তিনি বলেন, পরে সভামঞ্চে নজরুল ইসলাম তার ভুল বুঝতে পেরে সভামঞ্চে আমার কাছে এসে ক্ষমা চান। আমি আদরের ভঙ্গিতে পিঠে হালকা হাত বুলিয়ে বলেছি ক্ষমা চাওয়ার কিছু হয়নি। পরবর্তীতে সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করায় আমি সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী নজরুলকে মারধর করেছি। নজরুল পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য বাজার ঘাট শ্রমিক ইউনিয়নের একজন শ্রমিক। তিনি কোনো দিন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
এমপি বলেন, যেসব মিডিয়া আমার বিরুদ্ধে নিউজ করেছে তারা আমার সাক্ষাৎকার নিলে তথ্যগত ভুল হতো না। ওই নজরুলের বিরুদ্ধে পাথরঘাটা থানায় ৭টি মামলা রয়েছে। একজন সন্ত্রাসীকে দিয়ে একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে নিউজ করায়।
তিনি আরও বলেন, পাথারঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডাক্তার শাহনাজ পারভীন দুই বছর ডিউটি না করে প্রধান সহকারীকে ম্যানেজ করে বিল তুলে নেয়। আমি প্রধান সহকারীর সঙ্গে রাগ করেছি। তিনি কেন বিল প্রস্তুত করলেন। আমার প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে নিউজ করায় আমি নাকি প্রধান সহকারীকে মারধর করেছি। অথচ ওই ডাক্তার ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫৯৩ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়।
এমপি আরও বলেন, শতকোটি টাকার সড়কের কাজ ঠিকাদার স্থানীয় সওজের প্রকৌশলীদের যোগসাজশে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করছে না। স্থানীয় জনগণ আমার কাছে অভিযোগ দিলে আমি মানসম্মত সিডিউল মোতাবেক কাজ করতে নির্দেশ দেই। তারা কাজ না করে কাজ ফেলে রাখে। আমার বিরুদ্ধে নিউজ করা হয় আমি কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের একজন এমপির যতটুকু দায়িত্ব আছে তেমনি সাংবাদিকদেরও সাদাকে সাদা বলা, কালোকে কালো বলার দায়িত্ব রয়েছে। ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে কোনো মানুষ নেই। আমি সারাজীবন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ছিলাম। এখনো আছি।
তিনি রাজনৈতিক ফিরিস্তি দিয়ে বলেন, আমি ১৯৯৮ সালে জনগণের ভোটে প্রথম রায়হানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। ২০০৩ সালে আবার ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হই। ২০০৯ সালে পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। ২০১৩ সালে উপনির্বাচনে বরগুনা-২ আসনে (পাথরঘাটা- বামনা- বেতাগী) প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই। দ্বিতীয়বার ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই। আমার জীবনে কারো হক নষ্ট করিনি। সব সময় দুর্নীতির ঊর্ধ্বে থাকি।
সাংবাদিকরা এমপিকে অনেক প্রশ্ন করলে সব প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। হাচানুর রহমান ঝন্টু নামের একজন সাংবাদিক আরও কিছু প্রশ্ন করতে চাইলে এমপি জবাব না দিয়ে চলে যান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব মৃধা, আব্বাস হোসেন মন্টু মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকুসহ বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানরা।