শিরোনাম
নতুন প্রজন্মকে মহাকাশবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী করা, জনগণের মধ্যে বিজ্ঞান সম্পর্কিত ধারণা তৈরি এবং অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা ও বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করতে সরকার বন্দর নগরী খুলনায় নির্মাণ করবে নভোথিয়েটার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার নামে এটি স্থাপিত হবে খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার কৃষ্ণনগর মৌজায়। এ জন্য অধিগ্রহণ করা হবে ১০ একর জমি।
পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, খুলনা স্থাপন” শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৫৫৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগামী ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের মেয়াদকালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করে জাতীয় অর্থনেতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দিয়েছে। ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্প সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশনের মতামতে বলা হয়েছে, সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আধুনিক গবেষণার ক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে উচ্চ অগ্রাধিকার প্রদানের কথা বলা হয়েছে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটি সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রকল্পটি চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দবিহীনভাবে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে জানিয়েছে কমিশন।
জানা গেছে, ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের মতো এই নভোথিয়েটারেও অর্ধগোলাকৃতি কক্ষে থাকবে বিমোহিত করার মতো পারফোরেটেড অ্যালুমিনিয়ামের পর্দা, এই জাতীয় পর্দায় চোখ রাখলে পুরো হল রুমের ছাদটাকেও মনে হয় সিনেমার অংশ। থাকবে জাপানের গোতো কোম্পানির জিএসএস হ্যেলিয়াস প্রজেক্টর। এটি বিভিন্ন স্পেশাল ইফেক্ট সৃষ্টি করে। থাকবে অ্যাস্ট্রোভিশন ৭০ প্রজেক্টর, যা ফিল্মে গ্রহ-নক্ষত্র দেখার সময় দর্শকের অনুভূতিকে অনেক বেশি সজাগ করে তোলে। এছাড়া বিশাল অ্যালুমিনিয়াম পর্দার সঙ্গে এ জাতীয় উন্নতমানের প্রজেক্টরের সমন্বয়ে ফিল্ম দেখতে বসলে গোটা দৃশ্যকে মনে হয় জীবন্ত। তাই নভোথিয়েটারের এই প্রদর্শনী হয়ে ওঠে সারাজীবন মনে রাখার মতো।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সরকার সারা দেশের নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী করা, জনগণের মধ্যে বিজ্ঞান সম্পর্কিত ধারণা দেওয়া, অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা-বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি এবং বৈজ্ঞানিক মনোভাব সঞ্চার করতে চায়। গৃহীত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সমাজের কুসংস্কার দূর করতে সহায়তা করবে।
উল্লেখ্য, ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে নিয়মিত দুটি ফিল্ম প্রদর্শিত হয়। খুলনা নভোথিয়েটারেও একই ধরনের ফিল্ম প্রদর্শিত হবে। একটি মহাকাশবিষয়ক শো ‘জার্নি টু ইনফিনিটি’, অন্যটি বাংলাদেশ বিষয়ক তথ্যচিত্র ‘এই আমাদের বাংলাদেশ’। ‘জার্নি টু ইনফিনিটি’ শোতে মহাকাশ বিষয়ক বিভিন্ন তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তথ্যচিত্রটি এখানকার উচ্চক্ষমতার প্রক্ষেপণযন্ত্রের অনিন্দ্য-সুন্দর আলোচ্ছটায় দর্শকদের যেন পৌঁছে দেয় গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে, মিল্কিওয়ে ও গ্যালাক্সিতে। দেখার পাশাপাশি সিম্যুলেশন ইফেক্টের কারণে দর্শকদের মনে তৈরি হবে ঘটনাস্থলে সশরীরে হাজির থাকার অনির্বচনীয় অনুভূতি।
অপর ফিল্মটিতে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতিফলন রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে ক্যাপসুল রাইড সিমুলেটর। এটি এমন একটি রোলার কোস্টার, যেখানে প্রাচীন পিরামিডের মধ্য দিয়ে সময়ের দরোজা পেরিয়ে মিশর ভ্রমণের অনুভূতি লাভ করা সম্ভব।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন