বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অবিচ্ছেদ্য : স্পিকার

ফানাম নিউজ
  ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭:০০

এনআরবিসি ব্যাংক, রাশিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ যৌথভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধু’ শীর্ষক স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করেছে। সূত্র: আরটিভি

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও রাশিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস এম পারভেজ তমালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, কবি আসাদ চৌধুরী, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবী, রাশিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ও এনআরবিসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু, এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালক একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, এনআআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়াসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া গণমাধ্যম ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করেছে এনআরবিসি ব্যাংক।

বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছেন দেশ-বিদেশের এমন বিশিষ্ট ৭৫ জন গুণীব্যক্তির লেখায় সমৃদ্ধ হয়েছে বইটি।

বইটির সম্পাদনা করেছেন আবদুল গাফফার চৌধুরী, কবি আসাদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবী, পারভেজ তমাল ও ড. আমিনুর রহমান সুলতান। অমর্ত্য সেন, সৈয়দ শামসুল হক, রেহমান সোবহান, আনিসুজ্জামান, ড.মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, নির্মলেন্দু গুণের মতো প্রথিতযশা লেখকরা লিখেছেন।

তাদের লেখার মূল উপজীব্য বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ, দর্শন, জাতির প্রতি বঙ্গবন্ধুর দিক নির্দেশনা, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি ইত্যাদি।

প্রধান অতিথি স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন মাটি ও মানুষের নেতা। বঙ্গবন্ধুর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে জড়িত রয়েছে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের অভিলাষ। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অবিচ্ছেদ্য। বঙ্গবন্ধু ছিলেন শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের উচ্চকিত কণ্ঠস্বর। যখনই কোনও দেশ, জাতি তাদের মুক্তির জন্য লড়াই করবে, বঙ্গবন্ধুর সেখানেই মুক্তির প্রতীক হয়ে থাকবেন।

শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের একটি আত্মমর্যাদার পথ তৈরি করে দিয়েছেন।

‘বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধু’ সংকলিত গ্রন্থটি একটি অনন্য দলিল হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন, আদর্শ, দর্শন কাছ থেকে দেখেছেন তাদের লেখা সংরক্ষণের এই উদ্যোগের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ। নতুন প্রজন্মেকে এই বইটি বঙ্গবন্ধুকে জানা ও বোঝার জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

ভবিষ্যতে বইটি অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ হবে বলে আশা করেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

ড. মসিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন মানবতাবাদী বিশ্বনেতা। তার মানবিক গুণ দিয়ে মানুষকে মুগ্ধ করতেন। যখন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন তখন রাজনীতির সঙ্গে বুদ্ধিজীবীর সম্পৃক্ত করেন। তিনি বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনের ওপর জোর দেন। তিনি মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও ন্যায্যতার প্রশ্নে কখনই আপোষ করেননি। স্বাধীনতার পরবর্তী দেশকে পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর নানা পরিকল্পনার কথা স্মরণ করেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আর্থিক কর্মকাণ্ডের বাইরে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে লেখা বইটি সংকলন করায় এনআরবিসি ব্যাংককে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার মহান চিন্তা-চেতনা লেখনির মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে হবে।

গ্রন্থটির সম্পাদনা পর্ষদের সদস্য কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, লেখার মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানাদিক নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াসেই ‘বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধু’ বইটি সংকলিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি এস এম পারভেজ তমাল বলেন, বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধু’ বইটিতে জাতির পিতার জীবন, রাজনৈতিক আদর্শ ও দর্শনের পাশাপাশি জাতির জন্য তার দিকনির্দেশনার নানা দিক উদ্ভাসিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্বনির্ভর অর্থনীতির স্বপ্ন দেখতেন। এনআরবিসি ব্যাংক তার এই দর্শনকে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বিশ্বের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে কীভাবে দেখেন ও বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদান এই বইয়ে স্থান পেয়েছে।

পারভেজ তমাল বলেন, প্রান্তিক মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করছে এনআরবিসি ব্যাংক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক প্রথাগত ব্যাংকিং কার্যক্রমের বাইরে শিল্প-সাহিত্য, মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস নিয়ে কাজ করছে। এটি সত্যই অনন্য উদাহরণ। এনআরবিসি ব্যাংক তার কার্যক্রমের মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে।

অনুষ্ঠানে সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন, সৃজনশীল গণমাধ্যমের জন্য আরটিভি, বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যমের জন্য একাত্তর টিভি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হিসেবে ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্ননের জন্য এসকেএস ফাউন্ডেশনকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু ও এসকেএস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী রাসেল আহমেদ লিটনকে ক্রেস্ট ও উত্তরীয় প্রদান করা হয়।