শিরোনাম
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামে একটি লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে। সূত্র: আরটিভি
ঢাকা ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বেঁচে ফেরা যাত্রীরা জানিয়েছেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আহত ও নিহতের অধিকাংশই বরগুনার বাসিন্দা। এরা বিভিন্ন প্রয়োজনে বাড়িতে ফিরছিলেন। এদের মধ্যে কিছুসংখ্যক যাত্রী ছিলেন যারা বরগুনার বাইরের বিভিন্ন এলাকার। তারা বরগুনায় স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে অথবা কাজে আসছিলেন। নিখোঁজ যাত্রীদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিসহ মোট ১৯ জনের পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। ওই যাত্রীদের স্বজনরা বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল, ঝালকাঠি হাসপাতাল ও ঘটনাস্থলে খোঁজ নিলেও সন্ধান পাননি।
বরগুনার সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের রিপন এসেছেন বরগুনা নৌ বন্দরে । রিপন জানান, আগুন দূর্ঘটনায় তার ফুপাত ভাই খাজুরা এলাকার মইন ও ফুপাত ভাইর ছেলে আবদুল্লাহ ও তার শালী আছিয়া নিখোঁজ রয়েছেন। হাসপাতাল ও ঘটনাস্থলে খোঁজ নিলেও তাদের খোঁজ মেলেনি।
স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে বরগুনার মাইঠা এলাকার ইদ্রিস খান, নলী এলাকার আবদুল হাকিম, চাঁদপুরের মনোয়ারা, পাথরঘাটার টেংরার পপি আক্তার, পাথরঘাটা পৌরসভার তালতলা এলাকার আবদুর রাজ্জাক, পাথরঘাটার কালমেঘার কালিবাড়ি এলাকার রাকিব মিয়া, বরগুনা সদরের হাফেজ তুহিনের মেয়ে (নাম অজ্ঞাত) সদরের ছোট আমতলী এলাকার জয়নব বেগম, মির্জাগঞ্জ উপজেলার রিনা বেগম ও তার মেয়ে রিমা, বরগুনা সদরের পরীরখাল এলাকার মা মেয়ে রাজিয়া ও নুসরাত, বরগুনা ঢলুয়া এলাকার মোল্লারহোড়া গ্রামের একই পরিবারের মা তাসলিমা (৩৫) ও তার মেয়ে মিম (১৫) তানিশা (১২) ও ছেলে জুনায়দেসহ চারজন নিখোঁজ রয়েছেন।
স্বজনদের তথ্যমতে, এখনও পর্যন্ত মোট ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়াও বরগুনার জেলার বিভিন্ন এলাকায় মোট ১০ জন যাত্রী বেচেঁ ফিরেছেন। এদের মধ্যে ঘটনার সময় লঞ্চে ছিলেন সাদিক বরগুনা সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের হেউলিবুনিয়া এলাকার সাদিক মৃধা।
তিনি বলেন, রাত পৌনে তিনটার দিকে ইঞ্জিনরুম থেকে বিকট বিষ্ফোরণের শব্দ হয়। মুহুর্তে গোটা লঞ্চ ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এসময় ডেকে ঘুমন্ত যাত্রীরা জেগে উঠে ছোটাছুটি শুরু করেন এবং হুলস্থুল অবস্থার সৃষ্টি হয়। কেউ কেউ নদীতে ঝাপ দেয় আবার অনেকে চিৎকার শুরু করে।
একপর্যায়ে উদ্ধারে কয়েকটি ট্রলার এগিয়ে আসে এবং যাত্রীদের অনেকে ট্রলারে উঠে তীরে নামেন। তিনি বলেন, মুলত আগুন লাগার পর লঞ্চটি তীরে নোঙর করার মত কেউ ছিলনা। লঞ্চ জোয়ারের তোরে ভাসতে থাকে।
নিহতের পরিবারকে ২৫ হাজার ও আহদের সর্বোচ্চ ১৫ হাজার করে টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বরগুনার জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, যেহেতু লঞ্চটি বরগুনায় আসছিল, যাত্রীদের অনেকেই বরগুনার। আমরা ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে ঘটনাস্থলে টিম পাঠিয়েছি। নিহতের পরিচয় জানার চেষ্টা করছি।