শিরোনাম
উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মহাসড়কে চলছে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এসব যান মহাসড়কে পাল্লা দিয়ে প্রতিযোগিতা করে বাস-ট্রাকের সঙ্গে। ফলে একের পর এক দুর্ঘটনায় ঘটছে প্রাণহানি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থেকে বিজয়নগর উপজেলার সাতবর্গ পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার এবং কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড় থেকে কসবা উপজেলার কুটি চৌমুহনী কালামোড়া সেতু পর্যন্ত ৪৩ কিলোমিটার এলাকা খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার অধীনে। এ মহাসড়কে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এরমধ্যে অধিকাংশই রেজিস্ট্রেশনবিহীন। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
সর্বশেষ ১৭ ডিসেম্বর নম্বরবিহীন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বৈশামুড়ায় ট্রাকচাপা দেয়। এতে ইটভাটার তিনজন শ্রমিক নিহত হন। এ ঘটনার আগে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জের বাহাদুরপুরে অটোরিকশায় যাতায়াতকালে ট্রাকচাপায় এক মুক্তিযোদ্ধার ভাই মারা যান। একই দিন কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের রামরাইলে সিএনজি-চালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে একজন নিহত হন।
এ বিষয়ে জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ মিয়া বলেন, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার ও ট্রাক্টরের বিষয়ে উচ্চ আদালত এবং মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে। এরপরও থেমে নেই হাইওয়েতে থ্রি-হুইলার ও ট্রাক্টর চলাচল। এতে মহাসড়কে বাস-ট্রাক চলাচল করতে সমস্যা হয়, ঘটছে দুর্ঘটনা। আমরা এসব বিষয় নিয়ে আন্দোলন করলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কয়েকদিন লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে এসব আটক করে। কিন্তু পরে আবার ঠিকই মহাসড়কে চলে থ্রি-হুইলার।
মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচলের বিষয়টি স্বীকার করে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল আলম বলেন, মহাসড়কে সিএনজি চলাচলের বিষয়ে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। ১৭ ডিসেম্বর তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে সিএনজি মালিক, চালক ও ট্রাকের বিরুদ্ধে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিএনজি মালিক সমিতির সহ-সভাপতি কাজি মনির বলেন, উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার পর আমরা চালকদের মহাসড়কে গাড়ি চালাতে বারণ করেছি। এরপরও চালকরা পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশে হাইওয়েতে গাড়ি চালাচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের সিলেট অঞ্চলের পুলিশ সুপার শহীদ উল্লাহ বলেন, মহাসড়কে রেজিস্ট্রেশন থাকুক বা না থাকুক কোনো অবস্থাতেই সিএনজি চলতে পারবে না। এছাড়া রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজি কীভাবে মহাসড়কে চললো এবং এক্সিডেন্ট হলো তার জবাবদিহিতা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে (ওসি) করতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাইওয়েতে সিএনজি চলাচল নিয়ে এরই মধ্যে ওসিকে শোকজ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার শহীদ উল্লাহ আরও বলেন, সরকার আমাদের নিয়োজিত করেছে জনগণের জানমাল নিরাপত্তা দিতে। জনগণের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলা যাবে না। বিষয়টি শক্তভাবে দেখা হবে।
সূত্র: জাগো নিউজ