শিরোনাম
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইন প্রণয়নের আগ পর্যন্ত এ সংক্রান্ত বিষয়ে আপাতত কোনো হস্তক্ষেপ করবেন না হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, ‘সরকার এ বিষয়ে (ইসি গঠন) আন্তরিক। তাই এ বিষয়ে আপাতত কোনো হস্তক্ষেপ করবো না। দেখা যাক, সরকার কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।’
এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের শুনানিতে রোববার (১২ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন।
পরে আজকের মত শুনানি মুলতবি করা হয়। একই সঙ্গে আদালত রিটের ওপর শুনানির জন্যে আগামী ১০ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।
আদালতে এদিন রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউসুফ আলী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ আদালতে রিটের ওপর শুনানি হয়েছে। শুনানি নিয়ে আদালত কিছু কথা বলেছেন।’
ইসি গঠনে আইন প্রণয়ন এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা নির্ধারণের নির্দেশনা চেয়ে গত সপ্তাহে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গোবিন্দ বিশ্বাস।
এর আগে গত ১৯ নভেম্বর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘সরকার ইসি গঠনে আইন প্রণয়নে আন্তরিক। তবে তাড়াহুড়ো করা ঠিক হবে না।’ এরপর সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ইসি গঠনে আইন প্রণয়নে একটি খসড়া আইনমন্ত্রীকে দেয়।
২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন তৈরি করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
হাইকোর্টের বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছিলেন।
জানতে চাইলে রিট আবেদনের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, ‘ওই রুলের শুনানি এখনো শেষ হয়নি। এখনো ওই রুলটি পেন্ডিং আছে।’
ওই রিট আবেদনে বলা হয়, ‘সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশন গঠন ও দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সংবিধান ও আইনের অধীনে পরিচালিত হওয়ার কথা বলা থাকলেও এখন পর্যন্ত আইন প্রণয়ন করা হয়নি। একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সংবিধানের বিধানের বাইরে চলতে পারে না।’
নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে এবং ওই বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধান-সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেবেন।
সংবিধানের ১১৮ (৪) অনুচ্ছেদে বলা আছে, নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবেন এবং সংবিধান ও আইনের অধীনে চলবেন।
এছাড়া ১১৮ (৫) অনুচ্ছেদে বলা আছে, সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনের বিধানে নির্বাচন কমিশনারদের কাজ রাষ্ট্রপতি যেভাবে আদেশ দেবেন, সেভাবে চলবে।
রুল পেন্ডিং থাকা অবস্থায় হাইকোর্টে আরও একটি রিট আবেদন করা হয়। এর প্রায় চার বছর পরে এসে আবারও একই দাবিতে গত ১৩ অক্টোবর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম। সেটিওও ঠিক-ঠাক শুনানি হয়নি বলে জানা গেছে।