শিরোনাম
নিরাপদ সড়কের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে আজও রাজধানীর রাস্তায় নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে ধানমন্ডি-২৭ ও সকাল ১০টায় রামপুরা এলাকায় রাস্তা আটকে আন্দোলনে নামেন তারা। এরপর পরই ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নেমে আসতে শুরু করেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। ঢাকার রাজপথ দখলে নিয়ে তারা নিরাপদ সড়কের দাবিতে অবরোধ পালন করছেন। তবে আকস্মিক এই অবরোধে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে গোটা রাজধানীজুড়ে। এই পরিস্থিতিতে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। তাদের বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। দুর্ভোগে পড়া সাধারণ মানুষও শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে যৌক্তিক বলে হাসিমুখে মেনে নিচ্ছেন বলে গণমাধ্যমের কাছে অনেকেই তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
সরেজমিনে ধানমন্ডি-২৭ এ গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি গভ. বয়েজ স্কুলের সামনে রাস্তা অবরোধ করেছেন। তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিচ্ছেন। কোনও পাবলিক বাসকে চালাচল করতে দিচ্ছেন না তারা। ফলে মিরপুর-আজিমপুর রুটের শতশত বাস আটকে আছে। বেশিরভাগ বাস থেকে যাত্রীরা নেমে যাওয়ায় বাসগুলো ফাঁকা দাঁড়িয়ে রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট কারগুলোকে কাগজপত্র দেখে ছেড়ে দিচ্ছেন।
ধানমন্ডি-৩২ যাওয়ার জন্য মিরপুর-১ থেকে বাসে উঠেছেন আতিকুর ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রো বাসে কলেজ গেট পর্যন্ত আসার পর রাস্তায় বেশ জ্যাম ছিল। পরে বাস থেকে নেমে হাঁটা শুরু করলাম। ধানমিন্ড-২৭ এ আসার পর দেখলাম, রাস্তা আটকে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিচ্ছেন। আমার মতো অনেকে হেঁটে গন্তব্য যান।’
ধানমন্ডি-২৭ এর আন্দোলনে ঢাকা কলেজ, আডিয়াল কমার্স কলেজ, ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, মোজাম্মদপুর সরকারি কলেজ, মোহাম্মদপুর পাবলিক স্কুল এবং ধানমন্ডি গভ. বয়েস স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।
ইশতিয়াক নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই—নিরাপদ সড়ক চাই।’
এদিকে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রামপুরা ব্রিজে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ডিআইটি সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ, ঢাকা ন্যাশনাল কলেজ, একরামুন্নেসা স্কুল কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান নিয়েছেন। তারা সেখানে বিভিন্ন রকম প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন।
রাসেল নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। যারা দুর্জয়কে হত্যা করেছে তাদের বিচার নিশ্চিত করতে চাই।’
এদিকে, রাপা প্লাজার সামনে সড়ক আটকে দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্র নিহতের প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ, সেন্ট জোসেফ, বিএএফ শাহীনের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ওই এলাকায় সড়কের দুই পাশে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আছেন। আধা ঘণ্টার ওপরে সড়ক অবরোধ চলছে।
গত সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর রামপুরার কাঁচাবাজারের বিপরীতপাশের সড়কে বাস চাপায় নিহত হয় দুর্জয়। ঘটনার পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা আটটি বাসে আগুন দেয়, তিন থেকে চারটি বাস ভাঙচুর করে।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন