সিনহা হত্যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত: তদন্ত কর্মকর্তা

ফানাম নিউজ
  ২৯ নভেম্বর ২০২১, ২৩:৩০
আপডেট  : ২৯ নভেম্বর ২০২১, ২৩:৩২

পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর (অব.) মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার অষ্টম দফায় প্রথম দিনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি খাইরুল ইসলামকে জেরার মধ্য দিয়ে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

অষ্টম দফায় শুরু হওয়া আদালতের  কার্যক্রম চলবে টানা তিনদিন আগামী (১ ডিসেম্বর) পর্যন্ত।

সোমবার সকাল সোয়া ১০টায় থেকে মামলার অন্যতম আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপের আইনজীবীরা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দির বিপরীতে জেরা করেন।

আদালতে উপস্থিত কয়েকজন আইনজীবী জানান, আসামি পক্ষের আইনজীবীর জেরার জবাবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন,সিনহা হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। কক্সবাজারের টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের তল্লাশি চৌকিতে সিনহাকে গুলি করে হত্যার আগে ওসি প্রদীপ কুমার দাসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কথা বলেছেন পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী।

মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড, সরেজমিন অনুসন্ধান ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে ১৫ আসামি পরিকল্পিতভাবে সিনহাকে হত্যা করেছেন।

খাইরুল ইসলামকে জেরা করেন প্রদীপ কুমারের জন্য নিযুক্ত আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত। রানা দাশগুপ্ত মামলার এজাহার, তদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষীদের দেওয়া সাক্ষ্য নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা করেন। 

সকাল সোয়া ১০টায় শুরু হওয়া এই জেরা মাঝখানে এক ঘণ্টার বিরতি দিয়ে চলে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। আদালত পরিচালনা করেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯ টায় ওসি প্রদীপসহ এই মামলার ১৫ জন আসামিকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আদালতে নিয়ে আসা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পিপি ফরিদুল আলম বলেন, অষ্টম দফার প্রথম দিনে আদালতের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা করেন রানা দাশগুপ্ত। জেরার জবাবে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, সিনহা হত্যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। হত্যাকাণ্ডের আগে প্রদীপের সঙ্গে লিয়াকতের একাধিকবার মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। সেই কল রেকর্ড পর্যালোচনা, সরেজমিন ঘটনার অনুসন্ধান এবং প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে তিনি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। 

পিপি বলেন, কাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা করবেন আসামিপক্ষের আরও চার আইনজীবী। আসামিপক্ষের আইনজীবী আছেন অন্তত ১৩ জন।এ মামলায় ৮৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এ পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৬৫ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। আদালত যদি মনে করেন বাকিদেরও সাক্ষী গ্রহণ করবেন। না হয় পরবর্তী কার্যক্রমের দিকে চলে যাবেন। 

গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে মেজর সিনহা নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার পর গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে প্রদীপ কুমার দাস, লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।

আলোচিত এ মামলায় গত বছর ১৩ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা ও র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের তৎকালীন দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ওসি প্রদীপসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

গত ২৭ জুন আদালত ১৫ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় ৮৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৬৫ জনের সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।

সূত্র: যুগান্তর